সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক সংবাদ সম্মেলন উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান প্রার্থীগণের তথ্য প্রকাশ

উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চেয়ারম্যান প্রার্থীগণের তথ্য প্রকাশ

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গত ১৯ জানুয়ারি ২০১৪ প্রথম পর্যায়ে ১০২টি উপজেলার জন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন-২০১৪ এর কার্যক্রম। এ পর্যন- চার দফায় সর্বমোট ৩৯৪টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ১০২টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১৭টি, তৃতীয় পর্যায়ে ৮৩টি এবং চতুর্থ পর্যায়ে ৯২টি উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও সীমানা জটিলতার কারণে রংপুর সদর, গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছায় নির্বাচন স’গিত করা হয়। পীরগঞ্জের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয় ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী আর একদফা তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে অবশিষ্ট উপজেলা সমূহের নির্বাচন আগামী ৩১ মার্চ-২০১৪ এর মধ্যেই সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করেছে নির্বাচন কমিশন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৪, প্রথম পর্যায়ে ৯৭টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। রংপুরের পীরগঞ্জে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৪ ফেব্রুয়ারি-২০১৪। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য সর্বমোট ১ হাজার ৭২৬ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন; যার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬৫৬ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৮০ জন। চূড়ান-ভাবে ৯৮টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪৩২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫১৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩২৯ জন অর্থাৎ তিনটি পদে সর্বমোট ১ হাজার ২৭৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আজকের এই সংবাদ সম্মেলনে আমরা আগামী ১৯ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ অনুষ্ঠেয় ৯৮টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শুধুমাত্র উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য প্রকাশ করছি। সময়াভাবে আমরা প্রথম পর্যায়ের সকল প্রার্থীর তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারিনি। গত ২৫ জানুয়ারি ২০১৪ প্রথম পর্যায়ের নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের এবং ৩ ফেব্রুয়ারি প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ঘোষিত হলেও আমরা সুজনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে অনুরোধ করেও সকল উপজেলার প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারিনি। তথ্যসমূহ ওয়েব সাইটে প্রকাশের জন্য লিখিত অনুরোধ জানালেও পত্র-পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে খবর প্রকাশের পূর্ব পর্যন- তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়নি। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ বিকেলের দিকে ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশ করা হলেও ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ পর্যন- প্রথম পর্যায়ের ৩১টি উপজেলার তথ্য আমরা পাইনি। গতকাল পর্যন- পাওয়া যায়নি সিলেটের জৈন-াপুর ও হাটহাজারী উপজেলার তথ্য। উল্লেখ্য, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ও সুপ্রিম কোর্টের এডভোকেট জনাব জেড আই খান পান্না-এর পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্য চারজন নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনের সচিবকে পৃথক পৃথকভাবে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রদত্ত হলফনামার তথ্য প্রকাশ ও প্রচার না করার জন্য কেন তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, সে মর্মে লিগাল নোটিশ দেয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন নিজেরাই যদি নির্বাচনী বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতো, তবে তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কোন জটিলতা হওয়ার কথা ছিল না। নির্বাচন কমিশনের চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়াল এর চতুর্থ অধ্যায়ে হলফনামার কপি সরবরাহ ও হলফনামার তথ্যাবলী প্রচারের ক্ষেত্রে বর্ণনাসমূহ নিম্নরূপ:

‘‘৩। হলফনামাসহ ফটোকপি সরবরাহ: প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সাথে ০৩ কপি করে হলফনামা, নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য অর্থ প্রাপ্তির সম্ভাব্য উৎসের বিবরণী, আয়কর রিটার্ন এবং কর পরিশোধের প্রমাণপত্রের কপি রিটার্নিং অফিসারের কাছে দাখিল করতে হবে। এক্ষেত্রে একটি মূল কপি ও ০২টি ফটোকপি হলেই চলবে। সংশ্লিষ্ট সকল প্রার্থীকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে। উক্ত তিন কপির মধ্যে এক কপি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে টাঙ্গিয়ে দেবেন এবং এক কপি সংরক্ষিত রাখতে হবে, যাতে এনজিও বা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে ফটোকপি করে নেয়ার জন্য তা প্রদান করা যায়। এনজিও, সংবাদ মাধ্যম বা অন্য যে কোন ব্যক্তি এরূপ ক্ষেত্রে নিজ দায়িত্বে ফটোকপি করবেন অথবা ফটোকপির খরচ নিজেরাই বহন করবেন।

৪। হলফনামার তথ্যাবলী প্রচার: প্রার্থীদের কাছে হতে হলফনামার মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যাদি রিটার্নিং অফিসারকে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার করতে হবে, যাতে ভোটারগণ প্রার্থীদের যাবতীয় তথ্যাদি বিচার বিশ্লেষণ করে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করতে পারেন। প্রার্থীর হলফনামার মাধ্যমে দাখিলকৃত তথ্যাদি লিফলেট আকারে ভোটারদের মাঝে প্রচার করতে হবে। লিফলেট উপজেলার হাটবাজারে বা অন্য জনাকীর্ণ স’ানে প্রচারের ব্যবস’া করতে পারবে। এক্ষেত্রে গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। সংবাদ মাধ্যমসহ বিভিন্ন এনজিও এরূপ প্রচারের বিষয়ে আগ্রহী হতে পারে। তাদের কাছে এ তথ্য লভ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে যে দিন যে প্রার্থী মনোনয়পত্র দাখিল করবে, সম্ভব হলে সে দিনই সে প্রার্থীর তথ্যাদি প্রদানের জন্য প্রস’ত থাকতে হবে। প্রয়োজনে সিডির মাধ্যমেও তথ্যাদি কপি করে দেয়া যেতে পারে। এসব তথ্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ওয়েব সাইটেও প্রকাশ করা হবে।’’

আমাদের প্রত্যাশা একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী জনস্বার্থের দিকটি বিবেচনায় রেখে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে প্রার্থীগণ কর্তৃক দাখিলকৃত তথ্যাদি দাখিলের সাথে সাথেই সরবরাহ, যতদ্রুত সম্ভব ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং ভোটাররা যাতে প্রার্থীদের সম্পর্কে জেনে-শুনে-বুঝে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সে লক্ষ্যে তথ্যসমূহ ভোটারদের মাঝে প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, প্রার্থীগণ মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা আকারে তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, অতীত এবং বর্তমানে ফৌজদারী মামলা, নিজের এবং নির্ভরশীলদের বাৎসরিক আয় এবং অস’াবর ও স’াবর সম্পদের বিবরণ, দায়-দেনা ও ঋণ সংক্রান- তথ্য এবং আয়কর সংক্রান- তথ্য জমা দিয়েছেন। প্রার্থীগণ প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ৯৬টি উপজেলার ৪২৮জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরছি। এতে কোন ধরনের প্রার্থীরা আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এ সম্পর্কে যেমন ধারণা পাওয়া যাবে, পাশাপাশি প্রার্থীদের সম্পর্কে জানার ব্যাপারে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হবে।

প্রার্থীদের তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো।

সম্পূর্ণ নিউজটি পাড়তে এখানে ক্লিক করুন।

Related Post

‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত‘আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তথ্য প্রকাশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

এবারই সর্বপ্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের নিজ এবং নির্ভরশীলদের সম্পর্কে সাত ধরনের ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য হলফনামা আকারে মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিল করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও প্রার্থী আয়কর

সুজন-এর উদ্যোগে ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০১৬: একটি সার্বিক মূল্যায়ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিতসুজন-এর উদ্যোগে ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০১৬: একটি সার্বিক মূল্যায়ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

‘ব্যাপক সহিংসতাসহ বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী অনিয়মের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সবচেয়ে মন্দ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন’ বলে মন্তব্য করেছেন সুজনÑসুশাসনের জন্য নাগরিক-এর নেতৃবৃন্দ। গত ১৬ জুন ২০১৬ সকাল

‘সংলাপ ও সমঝোতা আজ জরুরি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত‘সংলাপ ও সমঝোতা আজ জরুরি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক দলসমূহকে অবিলম্বে সংলাপে বসার জন্য স্বনির্বন্ধ অনুরোধ জানিয়েছেন সুজন নেতৃবৃন্দ। আজ (১০ জানুয়ারি, ২০১৫)