সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক ড. বদিউল আলম মজুমদার,লেখালেখি ক্ষমতা ও রাজনীতি: অজাযুদ্ধে কি শুধুই আঁটুনি সার?

ক্ষমতা ও রাজনীতি: অজাযুদ্ধে কি শুধুই আঁটুনি সার?

palo_logo
বদিউল আলম মজুমদার
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে−অজাযুদ্ধে আঁটুনি সার। যুদ্ধে লিপ্ত ক্ষমতাধর প্রাণী মাথা ঘুরিয়ে এনে এমন ভান করে যে, দেখে মনে হয় তারা যেন একে অপরকে অতি জোরে আঘাত করবে, কিনতু বাস্তবে তা ঘটে না। অর্থাৎ ক্ষমতাধর প্রাণীর মধ্যে যুদ্ধ শুধু পাঁয়তারাতেই সীমাবদ্ধ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন সম্পর্কে গণমাধ্যম থেকে জেনে নাগরিক হিসেবে আমার মনে বারবার এই প্রবাদের কথা মনে আসে। আমার মনে প্রশ্ন জাগে, দল দুটির কাউন্সিল কি নিতান্তই পাঁয়তারাসর্বস্ব ছিল? এগুলো কি শুধু নিয়ম রক্ষার খাতিরেই অনুষ্ঠিত হলো? আমরা কি আবারও রাজনৈতিক দলের সংস্কারের সমস্যা এড়িয়ে গেলাম? আমরা কি গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলাম?

রাজনৈতিক দলের সংস্কারের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অনেকেরই হয়তো স্নরণ আছে, ২০০৫ সালের ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ১১ দলের পক্ষে ‘অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচনীব্যবস্থার সংস্কারের রূপরেখা’ উত্থাপন করেন। রূপরেখার ৯ ধারায় ‘রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত’ করার লক্ষ্যে সুস্পষ্টভাবে অঙ্গীকার করা হয়, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক বিধিবিধানের ভিত্তিতে পরিচালনা, দলের কর্মকর্তাদের নিয়মিত নির্বাচন এবং দলের আর্থিক বিবৃতি নির্বাচন কমিশনকে প্রদান বাধ্যতামূলক করতে হবে।’
একইভাবে ২০০৫ সালের ২২ নভেম্বর পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে যে ‘অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি’ ঘোষণা করা হয়, তাতেও পূর্বঘোষিত সংস্কার প্রস্তাবের প্রতি পুনঃসমর্থন ব্যক্ত করা হয়। কর্মসূচির প্রথম ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়, ‘২০০৫ সালের ১৫ জুলাই ঘোষিত অভিন্ন রূপরেখার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কারসহ কালো টাকা, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা হবে এবং তার মধ্য দিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ সংস্কার প্রস্তাবের ভিত্তিতে নির্বাচন ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না এবং সে ধরনের কোনো নির্বাচন জনগণ করতে দেবে না।’
পরে ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ব্যাপক আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ সংশোধন করে অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করে, তাতে এসব সংস্কার প্রস্তাব রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের শর্ত হিসেবে স্থান পায়। নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রণীত যে কয়টি অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়, তার মধ্যে এ অধ্যাদেশটি অন্যতম।
মহান জাতীয় সংসদের পাস করা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধিত) আইন ২০০৯-এর ৯০বি ধারায় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কতগুলো শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আইনের বিধানানুযায়ী [৯০বি(১)(বি)]: ‘যদি কোনো রাজনৈতিক দল…কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত হতে চায়, তাহলে তার গঠনতন্ত্রে নিম্নের সুস্পষ্ট বিধান থাকতে হবে, যেমন…(i) কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সকল পর্যায়ের কমিটির সদস্যদের নির্বাচিত হওয়ার; …(iii) কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক অথবা ছাত্র অথবা আর্থিক, বাণিজ্যিক অথবা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারী-কর্মকর্তা অথবা শ্রমিকদের অথবা অন্য কোনো পেশার সদস্যদের নিয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন হিসেবে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ রাখার; তবে শর্ত থাকে, কোনো কিছুই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে সংগঠিত হওয়ার অথবা সংগঠন, সমিতি, ট্রেড ইউনিয়ন ইত্যাদি গঠন করার এবং সব ধরনের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চা করার, এবং ব্যক্তি হিসেবে, বিদ্যমান আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হবে না।’ অর্থাৎ নিবন্ধিত দলের জন্য অঙ্গ অথবা সহযোগী সংগঠন থাকা বেআইনি।
উল্লেখ্য, আমরাই প্রথম ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’-এর পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরি এবং ২০০৪ সালের জুলাই মাসে ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার-এর সঙ্গে যৌথভাবে ‘পলিটিক্যাল রিফর্মস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করি। পরে ২০০৫ সালের প্রথম দিকে সুজন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আরেকটি গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে একটি সুস্পষ্ট সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। নির্বাচনী প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলের সংস্কার এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি ছিল সংস্কার প্রস্তাবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। গণমাধ্যমের সহায়তার ফলে সংস্কার ধারণাগুলোর পক্ষে পরবর্তী সময়ে ব্যাপক জনমত সৃষ্টি হয়। আমরা আনন্দিত হয়েছিলাম, জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত ১১ দল এসব প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং ১৫ জুলাই ২০০৫-এর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা জাতির সামনে পেশ করে।
কেন রাজনৈতিক দলের সংস্কার? কেন তাদের গণতন্ত্রায়ণ আবশ্যক? রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে গণতান্ত্রিক চর্চার অভাব আমাদের জন্য একটি গুরুতর সমস্যা। রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি। দল ছাড়া গণতন্ত্র কার্যকর হতে পারে না, যদিও জর্জ ওয়াশিংটনসহ মার্কিন জাতির পিতাদের অনেকে প্রথম দিকে ভেবেছিলেন, রাজনৈতিক দল ‘ইভিল’ বা ক্ষতিকারক। কিনতু কালের বিবর্তনে এবং অভিজ্ঞতার আলোকে গণতান্ত্রিক সমাজে রাজনৈতিক দলের অপরিহার্যতা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাই বাংলাদেশে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিকব্যবস্থা কায়েম করতে হলে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক, আর্থিকভাবে স্বচ্ছ ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কোনো বিকল্প নেই।
নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আমরা আশা করেছিলাম, মহাজোটের নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ এবং অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি আইনের বিধানগুলো পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করবে। শুধু আক্ষরিক অর্থেই নয়, চেতনার দিক থেকেও। আরও সুস্পষ্টভাবে আমরা আশা করেছিলাম, দলের সর্বস্তরের কমিটি নির্বাচিত হয়ে আসবে, যার ভিত্তিতে জাতীয় কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে আইন ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো বিলুপ্ত করা হবে।
জাতীয় পার্টির বিভিন্ন স্তরের কমিটিগুলো নির্বাচিত হয়ে এসেছে বলে আমরা শুনিনি। কেন্দ্রীয় কমিটিও নির্বাচিত হয়নি, বরং দলীয় কাউন্সিলে দলের প্রধান জেনারেল এরশাদ কৌশলগত কারণে কিছুদিনের জন্য সরে দাঁড়ালেও আজীবন দলের সভাপতি থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। নিঃসন্দেহে এ ঘোষণা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধিত) আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। অনেকের মতে, এমনকি এ ঘোষণা ছিল শিষ্টাচারবোধেরও পরিপন্থী। সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল এরশাদের কাছ থেকে এর চেয়ে ব্যতিক্রম কিছু আশা করাও সংগত নয়!
তবে দীর্ঘ ৬০ বছরের পুরোনো এবং অনেক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আমরা আরও অনেক বেশি আশা করেছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, আইনের আকাঙ্ক্ষা পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দলের সর্বস্তরের কমিটির নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে। একই সঙ্গে দলের নবনির্বাচিত সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটির অন্য সদস্যদের নির্বাচিত করবেন।
এটি সত্য যে, ডেলিগেটদের পক্ষ থেকেই সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে কমিটির অন্য সদস্যদের মনোনীত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়। অতীতেও তা-ই ঘটেছে, এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। কেউ কেউ এটিকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি হিসেবে অভিহিত করলেও নিঃসন্দেহে এটি একটি সামন্তবাদী প্রথা এবং এটি গণতান্ত্রিক চেতনার সঙ্গেও অসংগতিপূর্ণ। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য এ প্রথার অবসান অত্যন্ত জরুরি। শেখ হাসিনা এর অবসানের উদ্যোগ নিতে পারতেন। আর গণতন্ত্রের সত্যিকারের উত্তরণ না ঘটলে এবং রাষ্ট্রে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে ভবিষ্যতে আবারও অগণতান্ত্রিক শক্তির মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা থেকে যাবে, যা কারও কাম্য হতে পারে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য পদে আসীন হওয়ার আকাঙ্ক্ষা বহু ব্যক্তির মধ্যেই রয়েছে। কিনতু শেখ হাসিনার আশীর্বাদ ছাড়া কারও প্রার্থিতা ঘোষণা করার সাহস ছিল না। দলের সর্বাধিক ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে তিনি সে সাহস জোগাতে পারতেন। আমরা মনে করি, নেতার কাজ শত ফুল ফুটতে সহায়তা করা, অগণিত নেতৃত্বকে ক্ষমতায়িত করা। যদি দলের অন্যান্য পদে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতো, তাহলে দলের অভ্যন্তরে নতুন প্রাণ সঞ্চার হতো। নতুনদের অনেকের সামনে আসার সুযোগ সৃষ্টি হতো। আমাদের রাজনীতিতে একটি নতুন সংস্কৃতির আবির্ভাব ঘটত। স্নরণ করা প্রয়োজন, ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে গত সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি সৃষ্টির ঘোষণা দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, জাতি এমন একটি নতুন সংস্কৃতির সুফল থেকে বঞ্চিত হলো। শেখ হাসিনা নিজেও বঞ্চিত হলেন এই মুহূর্তের সর্বাধিক ক্ষমতাধর ও আওয়ামী লীগের অবিসংবাদিত নেতা থেকে একজন কালজয়ী মহান নেতায় পরিণত হওয়ার সুযোগ থেকে।
আমরা বিশেষভাবে ব্যথিত হয়েছি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কয়েকটি অঙ্গসংগঠনকে সহযোগী সংগঠন হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টায়। দুর্ভাগ্যবশত, এর মাধ্যমে নাম বদল হবে, কিনতু দিন বদল হবে না। দিন বদলের জন্য প্রয়োজন হবে কঠিন সিদ্ধান্ত, যা দুরূহ ও কষ্টদায়ক। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে হলে প্রয়োজন ছিল সব অঙ্গসংগঠনের বিলুপ্তি। ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগকে ‘স্বাধীন’ করে দিলে ছাত্র ও শ্রমিক রাজনীতিতে কোনো গুণগত পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা যায় না। এ ছাড়া সহযোগী সংগঠন থাকাও বিদ্যমান আইনের পরিপন্থী। তাই আবারও আইন অমান্য করা হলো! প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণমুক্ত নির্বাচন কমিশনের এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখার আমরা অপেক্ষায় রইলাম। আরও অপেক্ষায় রইলাম সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির বক্তব্য শোনার।
পরিশেষে এটি সুস্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কাউন্সিল অধিবেশন ছিল বহুলাংশে নিয়ম মানার আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। দল দুটো নিয়ম মেনেছে, ছয় মাসের মধ্যে দলের সংশোধিত গঠনতন্ত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে, কিনতু নিয়মগুলো মেনে নিতে পারেনি। তারা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধিত) আইনের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। তারা তাদের অতীতের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। অতীতে যেভাবে হয়েছে, এবারকার কাউন্সিলও অনেকটা সেভাবেই হয়েছে। আবারও দলে গণতন্ত্রায়ণের এবং অঙ্গসংগঠন নিয়ে সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এত প্রতিশ্রুতি, আইনের এত বিধিবিধান, এত প্রচেষ্টা আঁটুনি সারেই পরিণত হলো! ফলে জাতি গণতান্ত্রিক চর্চায় আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলো। একই সঙ্গে শেখ হাসিনাও বঞ্চিত হলেন একটি অনন্য ‘লিগেসি’ বা উত্তরাধিকার রেখে যাওয়ার সুযোগ থেকে, যা তাঁকে জাতির ইতিহাসে অবিস্নরণীয় করে রাখত।
আশা করি, আমাদের জাতীয় নেতারা বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাববেন এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন। নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সাম্প্রতিক বক্তব্য আমাদের কিছুটা আশাবাদী করে। কামনা করি, এগুলো শুধু কথার কথা নয়।
ড. বদিউল আলম মজুমদার: সম্পাদক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
তথ্য সূত্র: প্রথম আলো, ৩০ জুলাই ২০০৯

Related Post

সংসদের এখতিয়ার: স্পিকার কি পরোয়ানা জারি করতে পারেন?সংসদের এখতিয়ার: স্পিকার কি পরোয়ানা জারি করতে পারেন?

বদিউল আলম মজুমদার সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংসদীয় সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত কমিটির তলবে দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান দুই কমিশনার ২ জুন অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় উপস্থিত হননি। অনুপস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি মাননীয়

রাজনীতি: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শিক্ষণীয়রাজনীতি: নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শিক্ষণীয়

বদিউল আলম মজুমদার গত ২৯ ডিসেম্বর, ২০০৮ তারিখে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে গঠিত চারদলীয় জোটের মহাবিপর্যয় ঘটেছে। সংসদে চারদলীয় জোটের আসনসংখ্যা ২০০১ সালের ২১৪ থেকে (নোয়াখালী-১ আসনসহ) ৩৩টি