৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:০০ টায় গাইবান্ধা খোলাহাটি উচ্চ বিদ্যালয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ’নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় করণীয়’ শীর্ষক নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খোলাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রেজাউন্নবী সরকার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিক মিহির ঘোষ, খোলাহাটি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহ আলম চাষী, দাড়িয়াপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৌহিদুল ইসলাম। প্রধান আলোচক হিসেবে অংশ নেন সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।
আসওয়াদ আলীর সঞ্চালনায় নাগরিক সমাবেশে আলোচক হিসেবে অংশ নেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, সুজন আঞ্চলিক সমন্বয়কারী রাজেশ দে, সহকারী শিক্ষক দুলারী বেগম, শিক্ষক রনজিৎ কুমার, আসাদুজ্জামান আসাদ, খোলাহাটি পূজা উৎযাপন কমিটির সভাপতি মহেন্দ্রনাথ বর্মন।
নাগরিক সমাবেশে নাগরিকগণ রাষ্ট্রের কাছে দাবী করে সংবিধান সমুন্নত রেখে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের অনুরোধ জানায়, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার – এ চেতনা সব জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার।
সুজন সমন্বয়কারী বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা মনে করছি, সরকার, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আক্রান্তদের পাশে সঠিক সময়ে দাঁড়াচ্ছে না, বরং কোথাও কোথাও জড়িয়ে পড়ছে ঘটনার সঙ্গে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসমূহসহ সচেতন নাগরিকদেরকেও যথাসময়ে আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। প্রধান বিরোধীদল বিএনপি, জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নিজেরাও এইসকল অপকর্মে সম্পৃক্ত হচ্ছে, কোথাও কোথাও তাঁরাই নেতৃত্ব দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহের জনপ্রতিনিধিদেরকেও কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
অংশগ্রহণকারীগণ নাগরিকদের নিরাপত্তা রক্ষা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিক সমাজের করণীয় চিহ্নিত করে।
প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর করণীয়:
# সাংবিধানিক অঙ্গীকার তথা আইনী বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
# কারো প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে নিরপেক্ষভাবে কাজ করা
# নিরাপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানী না করে প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা
# অনাকাঙ্খিত ঘটনার পূর্বাভাস বা তথ্য পেলে পূর্ব থেকেই প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ
ক্স দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া।
জনপ্রতিনিধিদের করণীয়:
# বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে স্ব স্ব এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পরিবেশ সৃষ্টি করা
# নির্বাচনের পর নিজেকে এলাকার সকল ভোটার তথা জনগণের প্রতিনিধি ভাবা
# সকল নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরনে সদা সতর্ক থাকা।
নাগরিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সচেতন নাগরিকদের করণীয়:
# নাগরিকদের ভেতর জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করা
# ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সদা সতর্ক থাকা
# প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা