সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান

Picture (17-04-2015)

নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলা, নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশকে দুর্নীতিমুক্ত, কার্যকর ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থীগণ। এছাড়া ঢাকাকে একটি আধুনিক বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করারও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তাঁরা। আজ ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ইনস্টিটিউট অব ডিপ্ল্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ-এর মাল্টিপারপাস হলরুমে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক ও ‘নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম’ (নাসফ)-এর যৌথ উদ্যোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে মেয়র প্রার্থীগণ এসব অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীগণ-সহ সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সুজন নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল হোসেনসহ ‘সুজন’-এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার পাঁচ শতাধিক ভোটার উপসি’ত ছিলেন।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার-এর সঞ্চালনার বিকাল ৩.০০টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানে মেয়র প্রার্থীগণ উপসি’ত ভোটারদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং নিজ নিজ বক্তব্যে সিটি করপোরেশনকে ঘিরে তাঁদের প্রত্যাশা ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া সুজন কর্তৃক প্রণীত ১৩ দফা পড়ে লিখিত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন মেয়র পদপ্রার্থীগণ।
তাঁরা ঘোষণা দেন, ১. “আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করবো। নির্বাচনে টাকার প্রভাব খাটানো ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকবো। নির্বাচনী আচরণ বিধিসহ সকল প্রকার বিধি-বিধান মেনে চলবো; ২. নির্বাচিত হলে আমি সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতিমুক্ত, কার্যকর ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবো। সকল নির্বাচিত কাউন্সিলরকে নিয়ে আমি যৌথ সিদ্ধানে-র ভিত্তিতে সিটি করপোরেশন পরিচালনা করবো; ৩. নির্বাচনে পরাজিত হলে গণরায় মাথা পেতে নেব; ৪. নির্বাচিত হলে আমি সিটি করপোরেশনের সম্পদ বৃদ্ধিসহ স্থানীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করবো; ৫. খাদ্য, বস্ত্র ,স্বাস্থ, শিক্ষা, নিরাপত্তা প্রভৃতি মৌলিক মানবিক চাহিদা নিশ্চিত করতে এলাকার মানুষকে সংগঠিত করে সামাজিক পুঁজি গঠন তথা সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবো। পাশাপাশি সন্ত্রাস ও মাদকাসক্তিসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক অপরাধ রোধে উদ্যোগ গ্রহণ করবো; ৬. স্থানীয় পরিকল্পনার ভিত্তিতে কাজ করবো। সিটি করপোরেশনকে প্রকৃত অর্থেই উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার লক্ষ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি ও বছরভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করবো; ৭. জনঅংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ায় প্রণীত বার্ষিক পরিকল্পনার ভিত্তিতে সিটি করপোরেশনের বাজেট প্রণয়ন করবো এবং উন্মুক্ত বাজেট অধিবেশনের আয়োজন করে বাজেট ঘোষণা করবো; ৮. সকল কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবো। দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতি পরিহার করবো; ৯. নারীর অবস্থার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে সিটি করপোরেশনের সকল মানুষের সার্বিক জীবন মানের উন্নয়নের জন্য কাজ করবো। ইভটিজিং বন্ধসহ বাল্যবিবাহ, যৌতুক, ধর্ষণ, অ্যাসিড নিক্ষেপসহ নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলবো; ১০. মুক্তিযোদ্ধা, পঙ্গু ও আহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং প্রতিবন্ধীসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করবো এবং তাদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবো; ১১. আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য যুবকদের সংগঠিত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাঁদের আত্মনির্ভরশীলতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করবো এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো; ১২. সিটি কর্পোরেশনের প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে সচেষ্ট থাকবো। দখলকৃত ভূমিসহ সকল ধরনের জলাশয় দখলমুক্ত করবো; এবং ১৩. নির্বাচিত হলে আমি প্রতিবছর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পদ, আয়-ব্যয় ও দায়-দেনার হিসাব প্রকাশ করবো।”
অনুষ্ঠানের আরেকটি অনুপ্রেরণামূলক দিক ছিলো ভোটারদের শপথ গ্রহণ। ভোট প্রদানকে পবিত্র দায়িত্ব মনে করে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীর স্বপক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অঙ্গীকার গ্রহণ করেন উপস্থিত ভোটারগণ। তাঁরা আরও অঙ্গীকার করেন, ‘আমরা অর্থ বা অন্য কিছুর বিনিময়ে অথবা অন্ধ আবেগের বশবর্তী হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করব না। দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মিথ্যাচারী, যুদ্ধাপরাধী, নারী নির্যাতনকারী, মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী, সাজাপ্রাপ্ত আসামী, ঋণ খেলাপী, বিল খেলাপী, ধর্মব্যবসায়ী, ভূমিদস্যু, কালোটাকার মালিক অর্থাৎ কোন অসৎ, অযোগ্য ও গণবিরোধী ব্যক্তিকে ভোট দেব না, দেব না, দেব না।’ তাঁরা সমস্বরে শ্লোগান ধরেন ‘‘আমার ভোট আমি দেব, জেনে-শুনে-বুঝে দেব। সৎ-যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিকে দেব’’।  উল্লেখ্য, ভোটারদের শপথনামা পাঠ করান সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

Related Post

সুজন-এর ঊদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানসুজন-এর ঊদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান

২০০২ সালে ‘সিটিজেন্স ফর ফেয়ার ইলেকশন্স’ নাম নিয়ে আত্মপ্রকাশের পর নির্বাচনকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল আজকের ‘সুজন’-এর। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত প্রতিটি নির্বাচনে, অর্থাৎ

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০১১নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০১১

সুজন পরিচালিত কার্যক্রমসমূহের সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত একটি নির্দলীয় নাগরিক সংগঠন। ২০০২ সালের ১২ নভেম্বর এদেশের একদল সচেতন নাগরিকের উদ্যোগে সংগঠনটি