আদালতের রায়
বদিউল আলম মজুমদার
গত ২৭ জুলাই ২০১০ প্রদত্ত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত রায়ের ফলে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল আপনা থেকেই নিষিদ্ধ হয়ে যাবে কি-না কিংবা এ ধরনের রাজনীতি বন্ধ করা কার দায়িত্ব তা নিয়ে একটি ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কারও কারও মতে, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের অস্তিত্ব ইতিমধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে। এটি এখন একটি গলিত শবমাত্র, যা শুধু সৎকারের অপেক্ষায় আছে। আবার অনেকেই বলেছেন, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ কোনো না কোনো কর্তৃপক্ষকে করতে হবে এবং এ দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। পক্ষান্তরে নির্বাচন কমিশন বলছে, এ দায়িত্ব কমিশনের নয়_ তাদের দায়িত্ব শুধু রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া এবং প্রয়োজনে নিবন্ধন বাতিল করা। এ ক্ষেত্রে আরও প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন_ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা আদৌ কি যৌক্তিক? নাকি শুধু রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার বন্ধ করা জরুরি? আর ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার জন্য ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বন্ধ করা কি আবশ্যক? ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে রাখাও কি ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বহুদিন থেকেই ধর্মের ব্যবহার-অপব্যবহার হয়ে আসছে। উদাহরণস্বরূপ, সুধাংশু শেখর হালদার বনাম নির্বাচন কমিশন ও অন্যান্য (২০০১ সালের ইলেকশন পিটিশন নং ১০) মামলার রায় থেকে ধর্মের অপব্যবহার সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। মামলায় বাদীর পক্ষ দাবি করে যে, বিবাদী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী নিজে এবং তার সহযোগীরা বাদীকে কাফের ও ভারতীয় ‘র’-এর এজেন্ট বলে অপপ্রচার চালান। আরও দাবি করা হয়, জনাব সাঈদী প্রচার করেন যে, আওয়ামী লীগ থেকে টাকা নিয়ে সেই টাকা পবিত্র কোরআন শরিফের ওপর রেখে দিয়ে সাঈদীকে ভোট দিলে তা অনৈসলামিক হবে না। এছাড়া জনৈক সাগর চৌধুরী বঙ্গবন্ধুকে হিন্দু বলে আখ্যায়িত করে লিফলেট প্রচারেরও অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। উপরন্তু, পবিত্র কোরআন শরিফের পোড়ানো পৃষ্ঠা দেখিয়ে পিরোজপুর জামায়াত অফিস জ্বালিয়ে দেওয়ার সময় কোরআন শরিফ পোড়ানো হয়েছে বলে দাবি করে আওয়ামী লীগকে ইসলামবিরোধী বলে আখ্যায়িত করা হয়। প্রকাশিত লিফলেটে আরও দাবি করা হয়, বাদী মুসলমানদের রক্ত দিয়ে মা কালীর পদস্নান করাতে চান। [দেখুন, বর্তমান লেখকের লেখা গ্রন্থ গণতন্ত্র, নির্বাচন ও সুশাসন (আগামী প্রকাশনী, ২০০৯)]
জনাব সাঈদী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করা হয় যে, তারা অপপ্রচার চালান, কাফেরকে ভোট দেবেন না; কাফেরকে ভোট দিলে জানাজা হবে না, আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে জান্নাতবাসী হবেন না; কাফেরকে ভোট দিলে গুনাহ হবে; আমাকে ভোট দিলে আল্লাহকে ভোট দেওয়া হবে; আমাকে ভোট দিলে বেহেশতে যেতে পারবেন; আমাকে ভোট দিলে আমি বেহেশতের টিকেট দেব (প্রথম আলো, ১৯ জানুয়ারি ২০০৮)।
ট্রাইব্যুনালে বিজ্ঞ বিচারপতি মোঃ ইমান আলী ২০০৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মামলাটির রায় দেন। রায়ে আদালত সাঈদীর বিরুদ্ধে ধর্মকে কাজে লাগিয়ে হালদারের চরিত্র হনন এবং তাকে ভোট দেওয়া থেকে ভোটারদের বিরত করতে প্ররোচিত করার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি বলে সিদ্ধান্ত দেন। তবে আদালত স্বীকার করেন, পিরোজপুর-১ আসনের নির্বাচনে ধর্মভিত্তিক অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। সাঈদী নিজে এগুলোতে সরাসরি জড়িত না থাকলেও, নিঃসন্দেহে এসব অপপ্রচার জনগণের ধর্মানুভূতিকে উস্কে দিয়ে নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে। ‘দুর্নীতিমূলক কার্যক্রমে’ লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিলেও, আদালত সাঈদীকে নির্বাচনী ব্যয়ের অবৈধ হিসাব দাখিলের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন ও তার নির্বাচন বাতিল করে দেন।
রাজনীতিতে ধর্মের এমন অপব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয় এবং এর অবসানও জরুরি। যারা ধর্মকে এভাবে ব্যবহার করে তাদেরও কঠোর শাস্তি দেওয়া আবশ্যক। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধিত) আইন, ২০০৯-এর ৭৩ ধারায় এর শাস্তির বিধানও রয়েছে। আইনের ৭৩(৪) ধারা অনুযায়ী, ‘কোনো ব্যক্তি দুর্নীতিমূলক কার্যক্রমে লিপ্ত হওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত হইয়া অনূ্যন দুই বৎসর এবং অনধিক সাত বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অর্থদণ্ডে ও দণ্ডিত হইবেন, যদি তিনি_ … কোনো ধর্ম, সম্প্রদায়, গোষ্ঠী, বর্ণ, উপ-দল বা উপ-জাতির অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে কোনো প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য বা তাহাকে ভোট দেওয়া হইতে বিরত থাকিবার জন্য কোনো ব্যক্তিকে আহ্বান করেন বা প্ররোচিত করেন।’
রাজনীতিতে ধর্মের অপব্যবহার বন্ধ জরুরি হলেও, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা না-করা একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রশ্ন, রাজনৈতিক বিবেচনায়ই যার সুরাহা হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করলে, এসব দলের অনুসারীরা, যারা সাধারণত পরকালের জন্য রাজনীতি করেন, উগ্রবাদের দিকে ধাবিত হবেন কি-না সে সিদ্ধান্ত রাজনীতিবিদদেরই নিতে হবে। এর পক্ষে-বিপক্ষে, উভয় দিকেই সমর্থন আছে। প্রসঙ্গত, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলেও ভারতে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বর্তমানে নিষিদ্ধ নয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যদিও এ স্পর্শকাতর কাজটি তিনি আদালত ও নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে করানোর চেষ্টা করছেন বলে অনেকের অভিযোগ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় নব্বই শতাংশ হলেও, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো, যারা ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, তাদের জনসমর্থন অত্যন্ত ক্ষীণ। যেমন, গত সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী মাত্র দুটি আসন পেয়েছে।
ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা না-করা রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিলেও, পঞ্চম সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত মামলার রায়ের ফলে সংবিধানের ১২ ও ৩৮ অনুচ্ছেদ পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য (ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা, (খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান, (গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার, (ঘ) কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হইবে।’ আর ৩৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ‘জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধসাপেক্ষে সমিতি বা সঙ্ঘ করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে; তবে শর্ত থাকে যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী কোনো সাম্প্রদায়িক সমিতি বা সঙ্ঘ কিংবা অনুরূপ উদ্দেশ্যসম্পন্ন বা লক্ষ্যানুসারী ধর্মীয় নামযুক্ত বা ধর্মভিত্তিক অন্য কোনো সমিতি বা সঙ্ঘ গঠন করিবার বা তাহার সদস্য হইবার বা অন্য কোনো প্রকারে তাহার তৎপরতায় অংশগ্রহণ করিবার অধিকার কোনো ব্যক্তির থাকিবে না।’
সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সম্পর্কিত এবং আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য নয়। কিন্তু ৩৮ অনুচ্ছেদ পুনরুজ্জীবনের পক্ষে আদালত রায় দেওয়ার ফলে সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার বিধান অন্তর্ভুক্ত করার অনেকটা বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি হয়েছে। আর তা হওয়াও প্রয়োজন। কারণ ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। এছাড়াও ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ ধর্মহীনতা নয়। একজন অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিও ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারেন।
উপরন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা একটি নিছক ধর্মীয় ইস্যু নয়, এটি একটি সাংবিধানিক ইস্যু। এক ধর্মকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দিলে, অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি বৈষম্য করা হয়। অন্য ধর্মাবলম্বীরা কম প্রাধান্য পান। তাই ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের জন্য কাম্য এবং পঞ্চম সংশোধনী বাতিলে আদালতের রায়ের পর তা অর্জন আরও জরুরি হয়ে পড়েছে। আদালতের রায় বাস্তবায়নের পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার জন্য অবশ্য আরও প্রয়োজন হবে অষ্টম সংশোধনীতে ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের বিধান বাতিল, যা দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের মাধ্যমে সংসদ সহজেই করতে পারে। আশা করি, বিশেষ কমিটি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে।
তবে সংবিধানে এ অনুচ্ছেদ পুনঃস্থাপিত হওয়ার পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি অবৈধ হলেও, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল আপনা থেকে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে না। সরকার চাইলে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বর্তমানে বিরাজমান ডজনখানেক রাজনৈতিক দল, যারা নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত, নিষিদ্ধ করতে পারবে। অথবা কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদালতের মাধ্যমে, সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘনের অভিযোগে, দলগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার উদ্যোগ নিতে পারে। তবে সংবিধান লঙ্ঘন করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে কাউকে শাস্তি দিতে হলে অবশ্যই আইন প্রণয়ন করতে হবে। দলগুলো অবশ্য তাদের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন এনে সংবিধানের ১২ ও ৩৮ অনুচ্ছেদের বিধানের সঙ্গে নিজেদের নামের ও কার্যক্রমের সামঞ্জস্যতা প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
অনেকে অবশ্য দাবি করেন, সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদ পুনরুজ্জীবিত হলেও, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা যাবে না। কারণ ৩৮ অনুচ্ছেদে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মভিত্তিক সমিতি ও সঙ্ঘ নিষিদ্ধ হওয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত সংজ্ঞা অনুযায়ী, রাজনৈতিক দল একটি অধিসঙ্ঘ বা ব্যক্তিসমষ্টি। তবে এ যুক্তি খুব জোরালো বলে মনে হয় না।
প্রসঙ্গত, সরকার চাইলে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি এখনই বন্ধ করতে পারে, এমনকি সংবিধান সংশোধন না করেই, যদিও এটি বর্তমান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে। এ জন্য আইনও আছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪-এর ২০ অনুচ্ছেদ_ যার শিরোনাম ‘বিশেষ ধরনের সমিতি (association) বা ইউনিয়ন গঠনে বাধানিষেধ’ _ অনুযায়ী, ‘(১) কোনো ব্যক্তি ধর্মের নামে বা ধর্মর্কে উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যের ভিত্তিতে গঠিত কোনো সাম্প্রদায়িক বা অন্য সমিতি বা ইউনিয়ন, যা তার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, এমন সংগঠন গঠন করিবেন না বা এর সদস্য হইবেন না বা অন্য কোনোভাবে এর কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করিবে না। (২) যখন সরকার সন্তুষ্ট হয় যে, কোনো সমিতি বা ইউনিয়ন (১) উপ-ধারার বিধানকে লঙ্ঘন করিয়া গঠিত হইয়াছে বা কার্যক্রম পরিচালনা করিতেছে, তখন সরকার, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বা ব্যক্তিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিয়া, সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রদানের মাধ্যমে ঘোষণা দিতে পারিবে যে, সংশ্লিষ্ট সমিতি বা ইউনিয়ন (১) উপ-ধারার বিধানকে লঙ্ঘন করিয়া গঠিত হইয়াছে বা কার্যক্রম পরিচালনা করিতেছে, এবং এমন ঘোষণার পর সংশ্লিষ্ট সংগঠন বা ইউনিয়ন বিলুপ্ত হইয়া যাইবে এবং এর সব সম্পত্তি ও অর্থ সরকারের কাছে বাজেয়াপ্ত হইয়া যাইবে।’ উল্লেখ্য যে, উপরিউক্ত আইনে প্রদত্ত ‘অ্যাসোসিয়েশন’ বা সমিতি সংজ্ঞায় রাজনৈতিক দলও অন্তর্ভুক্ত।
সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার কথা জোরালোভাবে বলা হচ্ছে। কিন্তু শুধু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নয়, কোনো রাজনৈতিক দলকেই নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা কমিশনের নেই। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (সংশোধিত) আইন ২০০৯-এর রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন সংক্রান্ত ৯০(গ) ধারা অনুযায়ী, ‘কোনো রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের যোগ্য হইবে না, যদি_ (ক) দলের গঠনতন্ত্রে উল্লিখিত উদ্দেশ্যসমূহ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের পরিপন্থী হয়; বা (খ) গঠনতন্ত্রে কোনো বিশেষ ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী, ভাষা বা লিঙ্গভেদে কোনো বৈষম্য প্রতীয়মান হয়…।’ অর্থাৎ ধর্মভিত্তিক রাজনীতিচর্চা করার জন্য নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারে মাত্র। এছাড়াও আইনের ৯০(জ)(খ) ধারা অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দল সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত হলেও, কমিশন তার নিবন্ধন বাতিল করতে পারে।
৩ আগস্ট, ২০১০
ড. বদিউল আলম মজুমদার : সম্পাদক সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক
সূত্র: সমকাল, ১২ আগষ্ট ২০১০
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও ধর্মনিরপেক্ষতা
Categories: