সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক Uncategorized,বিবৃতি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ওপর হামলার ঘটনায় সুজন-এর উদ্বেগ

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ওপর হামলার ঘটনায় সুজন-এর উদ্বেগ

১৭ জানুয়ারি ২০১৮

আমরা সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, গতকাল ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, নারায়ণগঞ্জ শহরে ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা ন্যাক্কারজনক এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূল শাস্তি দাবি করছি।

ফুটপাত নগরবাসীর পায়ে হাঁটার পথ। ফুটপাতে দোকান বসিয়ে নাগরিকদের চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বেআইনি। তাছাড়া ফুটপাত হকারদের দখলে থাকলে সাধারণ মানুষকে মূল সড়কে নেমে আসতে হয়। ফলে সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজট। সঙ্গত কারণেই ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত থাকা উচিত। আর ঔচিত্যবোধ ও আইনি অবস্থান থেকে এই যৌক্তিক কাজটি করতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াত আইভী হামলার শিকার হন।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী তাঁর ওপর হামলার জন্য সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে দায়ী করেছেন এবং একই সাথে বলেছেন যে, একনেকের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে অবিলম্বে নির্দিষ্ট স্থানে একটি মার্কেট করে হকারদের পুনর্বাসেনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। অপরদিকে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান হকারদের উচ্ছেদের আগে তাদের পুনর্বাসনের ওপর জোর দেন এবং এই ঘটনার জন্য সেলিনা হায়াত আইভীকে অভিযুক্ত করেন। আমরাও মনে করি যে, হকারদের বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখা উচিত।

ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের ঘোষণা দেয়া হলে, সংসদ সদস্য শামীম ওসমান তাদের ফুটপাতে বসার আহ্বান জানান এবং হকাররা ফুটপাতে বসে পড়ে। গতকাল ১৬ জানুয়ারি, বিকেল ৪টার দিকে নগর ভবন থেকে মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীর নেতৃত্বে সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরসহ চার-পাঁচশত মানুষ ফুটপাত দিয়ে চাষাঢ়ার দিকে হাঁটতে থাকেন। এদিকে চাষাঢ়ায় শহীদ মিনারের আশে-পাশে কয়েক হাজার হকার জড়ো হয়। মেয়রের সাথে থাকা লোকজন সায়াম প্লাজার সামনে আসা মাত্র তাদের ওপর বৃষ্টির মত ইটপাটকেল ছোড়া হয়। এ অবস্থায় মেয়র পায়ে আঘাত পান এবং রাস্তায় বসে পড়েন। তার সমর্থকরা তাকে ঘিরে রেখে ইটের আঘাত থেকে রক্ষা করে। এরপর দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায় এবং অনেকে আহত হন। উল্লেখ্য, একজন আগেèয়াস্ত্রধারীর বিরুদ্ধে মেয়রের সাথে থাকা লোকজনের ওপর গুলি ছোড়ারও অভিযোগ ওঠে এবং এক পর্যায়ে তিনি গণপিটুনীরও শিকার হন।

পরিশেষে, সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমরা এই মর্মে উদাত্ত আহ্বান জানাতে চাই যে, সরকারের নীতি হওয়া উচিত ‘দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন’। সরকারের নীতি হওয়া উচিত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।

আশাকরি সরকার অতি দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনবে।

এম হাফিজউদ্দিন খান                                                                       ড. বদিউল আলম মজুমদার
সভাপতি                                                                                        সম্পাদক

 

 

Related Post

‘নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন‘নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ইস্যুটি একটি সার্বজনীন বিষয় এবং এটি সকল নাগরিকের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাষ্ট্রপতিকে তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সংলাপ করার

এমন বন্ধু থাকলে…এমন বন্ধু থাকলে…

  বদিউল আলম মজুমদার | তারিখ: ০৫-১২-২০১০ ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সাম্প্রতিক বক্তব্য (যুগান্তর, ৩ নভেম্বর ২০১০) পড়ে আমরা আশ্চর্য হয়েছি। তিনি

চিকিৎসাও একটি সেবাচিকিৎসাও একটি সেবা

বদিউল আলম মজুমদার বস্তুত যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার আকাশচুম্বী খরচের কারণে সমাজের উচ্চবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মধ্যকার দূরত্ব ক্রমাগতভাবে প্রকট হচ্ছে। তবে নিম্নবিত্তের কোনো মেধাবী সন্তান যদি ব্যয়বহুল নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি