সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক Uncategorized নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন


নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী কর্তৃক হলফনামায় উলে­খিত বিভিন্ন তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন নাগরিক সংগঠন সুজন- সুশাসনের জন্য নগরিক। গত ১৩ জানুয়ারি ২০২২, সকাল ১১টায়, অনলাইনে সংবাদ সম্মেলটি অনুষ্ঠিত হবে। সুজন কোষাধ্যক্ষ জনাব সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ-এর সভাপতিত্বে এবং সুজন-সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করবেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। সুজন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুজন সহসভাপতি হামিদা হোসেন, সহসম্পাদক জাকির হোসেন, সুজন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক সিকান্দার খান, প্রকৌশলী মুসবাহ আলীম, ফারুক মাহমুদ চৌধুরী ও ড. শাহনাজ হুদা। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ সুজনের সম্পাদক ধীমান সাহা এবং ময়মনসিংহ সুজনের সহসম্পাদক এডভোকেট শিব্বির আহমেদ লিটন উপস্থিত ছিলেন।

দিলীপ কুমার সরকার প্রার্থীদের তথ্য তুলে ধরে বলেন, শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে দেখা যায় ৭ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের (৪২.৮৬%) শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ও ৩ জনের (৪২.৮৬%) স্নাতক। বাকী ৩ জনের মধ্যে ১ জন (১৪.২৯%) এসএসসি সমমান। ওয়ার্ডের তথ্য পাওয়া ১৪৬ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৭৪ জনের (৫০.৬৮%) শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি’র নীচে। ১৮ জনের (১২.৩৩%) শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি এবং ১৮ (১২.৩৩%) জনের এইচএসসি। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী প্রার্থীর সংখ্যা যথাক্রমে ২৫ (১৭.১২%) ও ৩ জন (২.০৫%)। কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে এসএসসি’র গণ্ডি অতিক্রম না করা প্রার্থীর সংখ্যা ২০ জন (৬০.৬১%)। ৭ (২১.২১%) জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি এবং ৩ (৯.০৯%) জনের এইচএসসি। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী প্রার্থীর সংখ্যা যথাক্রমে ২ (৬.০৬%) ও ১ জন (৩.০৩%)। বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, সর্বমোট ১৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে সিংহভাগের শিক্ষাগত যোগ্যতাই (১২০ জন বা ৬৪.৫২%) এসএসসি বা তার নীচে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই হার ছিল ৭১.৬৪%। পক্ষান্তরে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র ৩৭ (১৯.৮৯%) জন। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই হার ছিল ১৪.৯২%। পেশার বিশ্লেষণে দেখা যায়, তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সর্বমোট ১৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে শতকরা ৭৫.৮১% ভাগই (১৪১ জন) ব্যবসায়ী। ৩ জন মেয়র প্রার্থীকে ব্যবসায়ী হিসেবে ধরলে এই হার দাড়ায় ৭৬.৩৪% (১৪২ জন)। মামলার ক্ষেত্রে দেখা যায়, তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সর্বমোট ১৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪৬ জনের (২৪.৭৩%) বিরুদ্ধে বর্তমানে, ৩৬ জনের (১৯.৩৫%) বিরুদ্ধে অতীতে এবং ২০ জনের (১০.৭৫%) বিরুদ্ধে উভয় সময়ে মামলা আছে বা ছিল। ৩০২ ধারায় ৯ জনের (৪.৮৪%) বিরুদ্ধে বর্তমানে এবং ৮ জনের বিরুদ্ধে (৪.৩০%) অতীতে এবং ১ জনের (০.৫৪%) বিরুদ্ধে উভয় সময়ে মামলা আছে বা ছিল । বার্ষিক আয়ের ক্ষেত্রে তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৯৯ জনের (৫৩%) বার্ষিক আয় ৫ লক্ষ টাকার কম এবং ৫৭ জনের (৩১%) ৫ লক্ষ টাকার অধিক। ৫০ লক্ষ টাকার অধিক আয় করেন ৩ জন (২.%)। উলে­খ্য, মোট ২২ জন (১২%) প্রার্থীর আয়ের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সম্পদের ক্ষেত্রে ১৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫৮ জন (৩১.১৮%) ৫ লক্ষ টাকার কম সম্পদের মালিক। কোটিপতি রয়েছেন মোট ১৪ জন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা হরে দেখছি, কিন্তু প্রার্থীদের তথ্য নিয়ে আলোচনা আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু এই তথ্যগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ভোটাররা এসব তথ্য জনার মাধ্যমে বুঝে-শুনে ভোট দিতে পারেন। প্রার্থী প্রদত্ত হলফনামার ছকে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, অনেক প্রার্থী তাও সম্পূর্ণ পূরণ করেন না। কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে হুলফনামা যাচাই-বাচাই করা; কোনো তথ্য অসম্পূর্ণ বা মিথ্যা প্রমাণিত হলে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলও করতে পারে কমিশন। কমিশনকে তার এ দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় না। তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে কমিশনের কোনো সহযোগিতাও আমরা পাই না। আগে প্রার্থীদের আয়কর সংক্রান্ত তথ্য কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যেত, কিন্তু গত ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে আয়করের কোনো তথ্য কমিশন ওয়েসাইটে দিচ্ছে না। এ আচরণের মাধ্যমে কমিশন কার স্বার্থে কাজ করছে? আমরা সিইসিকে বলতে শুনেছি একজন এমপি আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও তা শাস্তিযোগ্য না। আচরণবিধি লঙ্ঘনই তো শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

জনাব সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার বলেন, প্রার্থীরা কে কত ট্যাক্স দিল এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হছে সম্পদের বিবরণী, যেটা ট্যাক্স রিটার্নের সাথে IT10B ফরমে জমা দিতে হয়। সেখানে প্রতি বছর সম্পদের পরিমাণ কী পরিমাণ বাড়ছে তার বিবরণ থাকে। তথ্যের মিসিং থাকা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে একটি বাধা। প্রার্থীদের তথ্য সংবলিত কনফারেন্স পেপারটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Related Post

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীগণ জনগণের মুখোমুখিমুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীগণ জনগণের মুখোমুখি

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নিয়ে ’সুজন’ শ্রীনগর উপজেলা কমিটির আয়োজনে ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে ’জনগণের মুখোমুখি’ অনুষ্ঠান।

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ওপর হামলার ঘটনায় সুজন-এর উদ্বেগনারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের ওপর হামলার ঘটনায় সুজন-এর উদ্বেগ

১৭ জানুয়ারি ২০১৮ আমরা সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, গতকাল ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, নারায়ণগঞ্জ শহরে ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের

রংপুরে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন:নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব শীর্ষক কর্মশালারংপুরে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন:নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব শীর্ষক কর্মশালা

নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কি হবে, তা নিয়ে দেশের বৃহৎ দুটি দল ঐকমত্যে পৌঁছতে না পারায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনিশ্চয়তার মুখে। আওয়ামী লীগ এবং তাদের ১৪ দলীয় জোট বলছে সর্বদলীয়