সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক Uncategorized,মানববন্ধন বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন এবং নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন এবং নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত

Manab Bandhanদেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে না দিয়ে দু দলের সংলাপের মাধ্যমে বিরাজমান সংকেটর সমাধান করা এবং সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শানি-পূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সংগঠন ‌‌’সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’ সুজন নেতৃবৃন্দ। গত ১ অক্টোবর ২০১৩ সকাল ১০:৩০- ১১:৩০ টা পর্যন- জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে তারা এ আহ্বান জানান। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজমুদার, সুজন কোষাধ্যক্ষ জনাব আব্দুল হক, জনাব হুমায়ুন কবির হিরু, জনাব রুহিন হোসেন প্রিন্স, জনাব স্বপন কুমার সাহা, সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী জনাব দিলীপ কুমার সরকার ও মানবেন্দ্র দেব, সুজন ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়া মুসবাহ আলীম ও সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা তপন চৌধুরী, অধ্যাপক কামাল আতাউর রহমান, সুজন মহানগর কমিটির সহ-সভাপতি জনাব আকবর হোসেন, ডেমোক্রেসী ওয়াচের প্রতিনিধি রকিবুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের প্রতিনিধি ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ। এছাড়া সুজনের দাবীর সাথে সংহতি জানিয়ে ডেমোক্রেসি ওয়াচ, নাগরিক উদ্যোগ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও নাগরিক ঐক্যেসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিগণ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
ড. বদিউল আলম মজুমদার তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বর্তমান সরকার আদালতের দোহাই দেখিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। অথচ পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য দু দলের পক্ষ থেকে কোন কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। বরং লুটপাটতন্ত্র বজায় রাখার জন্য উভয় দলই যে কোনো উপায় ক্ষমতায় যেতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘সরকার একদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে, আরেকদিকে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’ মন্ত্রিসভায় আরপিওর যে বিল উস্থাপিত হয়েছে তা নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার জন্য যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি এ সময় সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সুজনের পক্ষ থেকে আরপিও-তে আরও নতুন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব করেন:
(১) আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের অন্তর্ভুক্তিকরণ।
(২) ‘না’ ভোটের বিধান পুন:প্রবর্তন করা এবং ‘না’ ভোট জয়ী হলে নতুন প্রার্থীর অংশগ্রহণে পুন:নির্বাচনের আয়োজন। প্রসঙ্গত, গতকাল ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট এক যুগান্তকারী রায়ে ‘না’ ভোটের তথা প্রার্থী প্রত্যাখ্যানের বিধানকে নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা – যা একটি মৌলিক অধিকার  বলে আখ্যায়িত করেছেন।
(৩) হলফনামায় অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রদান এবং তথ্য গোপনের জন্য বিজয়ী প্রার্থীর নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে প্রদান।
(৪) হলফনামার ছকে পরিবর্তন আনা। যেমন বয়স, পেশার সুস্পষ্ট বিবরণ, আয়ের উৎসের বিস্তারিত তথ্য, নিজের ও নির্ভরশীলদের সম্পদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা ও মূল্য উল্লেখ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিকানার ও সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কের বিস্তারিত তথ্য, প্রার্থীর রাজনৈতিক পরিচিতি (দলবদলের তথ্যসহ অতীতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিবরণী) ইত্যাদি সংযোজন। এর ফলে প্রার্থীরা তাদের আয়ের উৎসের বিস্তারিত বর্ণনা, সমপদের মূল্য এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে তাদের মালিকানার তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য হবেন, যা ভোটারদের জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
(৫) নির্বাচনকালীন গুরুতর অসদাচরণের জন্য তদন্ত সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন বাতিলের ক্ষমতা প্রদান।
(৬) মনোনয়নপত্র ইলেকট্রনিক ফাইলিং-এর বিধান।
(৭) দলের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে তৈরি সর্বোচ্চ তিন জনের প্যানেল থেকে মনোনয়ন প্রদানের বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি।
(৮) আইনটি বাংলায় ভাষান-রকরণ।
(৯) ব্যালট পেপারে একই সঙ্গে মার্কা এবং প্রার্থীর ছবি ব্যবহার।
হুমায়ুর কবির হিরু বলেন, ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। এজন্য পূর্বে আরপিওতে থাকা ভালো বিধানগুলো পুনরায় অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।’ উদাহরণস্বরূপ তিনি ‘না’ ভোটের বিধান পুন:প্রবর্তন করার দাবী জানান।
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, দেশের মানুষ দু দলের কাছে তামাশা দেখতে চায় না। তারা চায় সংলাপের মাধ্যমে সংকটের সমাধান করে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হোক।’ তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় আরপিওর যে বিল উপস্থাপিত হয়েছে তাতে জামানত আর নির্বাচনী ব্যয় বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচনে টাকার খেলা আরও বাড়বে এবং ভালো লোক নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ পাবে না।’
মানবেন্দ্র দেব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা না হলে শুধুমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুন:প্রবর্তন করলেই বর্তমান সমস্যার সমাধান হবে না।’
জনাব কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ সরকার বলেন, নির্বাচন আমাদের দোড়গোরায়, অথচ বিরাজমান সংকট সমাধানে প্রধান দুদল থেকে কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তিনি দেশের স্বার্থে অতি দ্রুত এ সংকট নিরসনের জন্য প্রধান দুই দলের প্রতি আহ্বান জানান।

Related Post

সুজন-এর উদ্যোগে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিতসুজন-এর উদ্যোগে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২১৩টি কেন্দ্রে ‘বিস্ময়করভাবে শতভাগ ভোট পড়ার অনিয়ম’ তদন্তে রাষ্ট্রপ্রতি মো. আবদুল হামিদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’ নেতৃবৃন্দ। এজন্য রাষ্ট্রপতিকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে

“নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানে” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত“নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানে” শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

গত ১১ ডিসেম্বর ২০১৬ সকাল ১১.৩০টায়, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি আয়োজিত ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান’

পার্লামেন্টে গৃহিত নিন্দা প্রস্তাব প্রত্যাহার করে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বানপার্লামেন্টে গৃহিত নিন্দা প্রস্তাব প্রত্যাহার করে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান

কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রতিবাদে পাকিস্তান পার্লামেন্টে গৃহিত নিন্দা প্রস্তাব প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সুজন নেতৃবৃন্দ। আজ বিকাল (২৪ ডিসেম্বর ২০১৩) ৩.০০টায় ‘সুজন-সুশাসনের