সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক Uncategorized রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন

রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন

roundtable_22_augustদশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধান ও সংস্কার ভাবনা’ শীর্ষক সুজনের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো ২২ আগস্ট। সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সত্যিকারার্থে কার্যকর এবং শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন-পরবর্তী কতগুলো সুদূরপ্রসারী পদ্ধতিগত প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রস্তাব করেন, যা বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। তার থেকে এক চুলও নড়া হবে না। প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া তার জোট নির্বাচনে যাবে না। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নিজ নিজ অনড় অবস্থান দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে দিয়েছে। সংবিধানের ৭নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ এখন আর দাঙ্গা-হাঙ্গামার রাজনীতি চায় না, চায় রাজনৈতিক সংকটের স্থায়ী সমাধান। স্থায়ী সমাধানের গুরুত্ব বোঝাতে হবে শহর এবং গ্রামাঞ্চলের মানুষকে। জনকল্যাণমুখী রাজনীতিসচেতন জনগোষ্ঠী সৃষ্টির লক্ষ্যে শাসন সংক্রান্ত এ জাতীয় আলোচনা তাই শুধু জাতীয় পর্যায়ে নয়, জেলা-উপজেলায় সারা বছর ধরেই হওয়া প্রয়োজন। তাৎক্ষণিক সমস্যা এবং সমাধানের দোলাচলের মধ্যে না থেকে স্থায়ী কাঠামোগত পরিবর্তনে যেতে হবে আমাদের। সুশাসন সংক্রান্ত আলোচনাগুলো যত বেশি হবে, সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনমত তত বাড়বে। সুশাসনের বিষয়টি শুধু সরকার, কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব আর বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে সীমিত থাকলে বাংলাদেশ এগোবে না। অন্তত দেশের সব ভোটারের উপলব্ধিতে বিষয়গুলো গ্রথিত করতে হবে, যাতে ভোটাররা মার্কানির্ভরতার পরিবর্তে জেনে, শুনে ও বুঝে প্রত্যেক ক্ষেত্রে জনকল্যাণকামী নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারে।
নির্বাচন কমিশন আমাদের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে। নির্বাচন কমিশন কী আচরণ করলে এবং কেমন আচরণ করলে আমরা সাধারণ ভোটাররা কমিশনের প্রতি আস্থাশীল হবো, কমিশন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে সেটি কমিশনকে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে খুঁজে বের করতে হবে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ৯১ঈ ধারাটি বর্জন করতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচন কমিশন নিজেরাই চায় কি-না কমিশন শক্তিশালী হোক। এই ধারায় গুরুতর অসদাচরণের কারণে তদন্তসাপেক্ষে প্রার্থর্িতা বাতিলের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া আছে। অথচ নির্বাচন কমিশন একটি আধা বিচারিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও এ ক্ষমতা আদালতের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিজেদের বাঁশিবিহীন, হলুদ কার্ড, লাল কার্ডবিহীন রেফারিতে পরিণত করতে চাচ্ছে।
গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চা কী রকম হওয়া প্রয়োজন, এ বিষয়টি এখন শুধু রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশনে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমে সম্পৃক্ত হয়ে উন্মুক্ত আলোচনা এবং সংসদীয় বিতর্কের মাধ্যমে যুগোপযোগী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। ভোটার তালিকার নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করতে হবে এবং বিধি অনুযায়ী হালনাগাদকরণ করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এখন আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। জাতীয় স্বার্থে সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয় রাজনীতিমুক্ত করা প্রয়োজন।
মূল প্রবন্ধ পড়তে <a href = "http://shujanbd.files.wordpress.com/2013/09/political-refom-proposal-of-shujan_22th-august.docx" target = "_blank" এখানে ক্লিক করুন

Related Post

‘নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন‘নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ও প্রাসঙ্গিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন

নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ইস্যুটি একটি সার্বজনীন বিষয় এবং এটি সকল নাগরিকের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাষ্ট্রপতিকে তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে সংলাপ করার

নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনঃ মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠাননারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনঃ মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থীদের নিয়ে ‌সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গত রবিবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরের দেওভোগে শেখ রাসেল পার্কের মুক্তমঞ্চে “জনগণের মুখোমুখি” অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ