গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হলে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে হবে। শুধু জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও আর সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচিত হওয়া প্রয়োজন। আজ সকাল ১১টায়, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক আয়োজিত ‘সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য প্রকাশ’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে সুজন নেতৃবৃন্দ এ মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজমুদার। এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সুজন নির্বাহী সদস্য বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব ও সুজন নির্বাহী সদস্য জনাব আলী ইমাম মজুমদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি বিচারপতি কাজী এবাদুল হক তার বক্তব্যে বলেন, ‘সুজন একটি নিদর্লীয় নাগরিক উদ্যোগ। আমরা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই। চাই গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ। আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন। এজন্য অতীতের মত এবারও সুজনের পক্ষ থেকে আসন্ন চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন ও প্রার্থীদেরকে নিয়ে জনগনের মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যাতে করে ভোটাররা সচেতন হয়ে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারে।’
ড. বদিউল আলম মজুমদার তাঁর বক্তব্যে বলেন, আগামী ১৫ জুন ২০১৩ বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা ও সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনেও সিটি কর্পোরেশনবাসী যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারে, সে লক্ষ্যে ‘সুজন’ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।’ মূলতঃ ভোটারদেরকে ক্ষমতায়িত করে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুজন সম্পাদক বলেন, ‘চার সিটি করপোরেশন নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।’ সময়মত নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়ায় তিনি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রার্থীদের তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যায় যে, এবারের নির্বাচনে বেশিরভাগ প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতাই এস.এস.সির নীচে। এছাড়া প্রার্থীদের বেশিরভাগই ব্যবসায়ী। অর্থাৎ নির্বাচনে অল্পশিক্ষিত ব্যবসায়ীদের জয়জয়কার পরিলক্ষিত হচ্ছে। প্রার্থীদের সম্পদের পরিমান ও আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্যও তুলে ধরেন ড. বদিউল আলম মজুমদার। বেশিরভাগ কাউন্সিলর প্রার্থীদের সম্পদের পরিমান পাঁচ লাখ টাকার নীচে এবং মেয়র প্রার্থীদের বেশিরভাগের সম্পদের পরিমান কোটি টাকার ওপরে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাবেক চারজন মেয়রের আয় ২০০৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কয়েকগুন বেড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ সময় তিনি প্রার্থীদের দায়-দেনা ও কর সংক্রান্ত তথ্যও তুলে ধরেন। সুজন সম্পাদক বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নের ভিত্তিতে নির্বাচন হওয়ার কারনে এবারের নির্বাচনে আশংকাজনকহারে প্রার্থী সংখ্যা কমে গেছে বলে। ২০০৮ সালের চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যেখানে প্রার্থী সংখ্যা ছিল ৪৮ জন, এবার তা নেমে এসেছে মাত্র ১২ জনে। ২০০৮ সালে চার সিটিতে কাউন্সিলর প্রার্থী ছিল ৯৯৩ জন, এবার ২৪৬ জন কমে প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৪৬ জনে।’ নির্বাচনে প্রার্থী সংখ্যা কমে যাওয়ায় ভোটারদের পছন্দের তালিকাও ছোট হয়ে যায় এবং তারা অনেকটা প্রতারিত হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন রাজনৈতিক পরিচয়ের ভিত্তিতে হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে বিভিন্ন দল ঘোষণা দিয়ে দলীয় ভিত্তিতে প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নজরে আনার জন্য উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি তিনি আহবান জানান।
সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেন, আসন্ন চার সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করতে পারা বর্তমান কমিশনের জন্য একটি পরীক্ষা। কারণ জাতীয় নির্বাচন সফলভাবে করতে গেলে সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নির্বাচন সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীগণের তথ্য
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীগেণর তথ্য
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীগেণর তথ্য
সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীগেণর তথ্য