গণতন্ত্রকে অর্থবহ ও কার্যকর করা ও দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিকদেরকে সংগঠিত হওয়া এবং সোচ্চার ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন সুজন_সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর নেতৃবৃন্দ। তাঁরা আজ ১৩ মে ২০১৭, শনিবার, সকাল ১০.০০টায়, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকায় ‘সুজন ঢাকা জেলা ও মহানগর সম্মেলন-২০১৭’ এ এই আহ্বান জানান।
সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুজন সহ-সভাপতি বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, নির্বাহী সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ, প্রকৌশলী মুসবাহ আলীম, সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ রুহিন হোসেন প্রিন্স, সুজন জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক অজয় রায়, বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা ও গণশিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক তাজিমা হোসেন মজুমদার, গোলাম মোহাম্মদ ইদু, সুজন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ।
সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সুজন সহ-সভাপতি বিচারপতি কাজী এবাদুল হক। দিনব্যাপী অনুষ্ঠেয় এই সম্মেলনে ‘সুজন’-এর ঢাকা জেলা ও মহানগর কমিটির তিন শতাধিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বলেন, ‘গণতন্ত্রকে অর্থবহ ও কার্যকর করতে হলে নাগরিকদেরকে সংগঠিত ও সোচ্চার হতে হয়। এজন্য একটি দেশে নাগরিক সংগঠন প্রয়োজন।’ সুজন নাগরিকদেরকে সংগঠিত করে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য কাজ করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘দেশ হলো মায়ের মত। তাই দেশের মধ্যে যদি অসংগতি ও সমস্যা থাকে তাহলে তা নিরসনে নাগরিকদেরকে সংগঠিত ও সোচ্চার হতে হয়।’ বর্তমানে দেশে যে অবিচার, বৈষম্য, বিচারহীনতা ও জঙ্গিবাদের সমস্যা রয়েছে তা নিরসনেও আমাদেরকে সোচ্চার হতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সুজনকে সত্যিকার অর্থেই একটি নাগরিক আন্দোলনে পরিণত করার জন্য তিনি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সুজন বাংলাদেশে একটি ভিন্নধারার নাগরিক আন্দোলন পরিচালনা করছে। নাগরিকদের উদ্যোগে ও অর্থায়নেই এটি পরিচালিত হয়। এটাই সুজন-এর শক্তি। সুজন ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার ও বিচার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে পরিচ্ছন্ন করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে।’ দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখা এবং বিচার ও শাসন ব্যবস্থাকে আরও সুসংহত করার জন্য সুজন-এর এই আন্দোলনকে অব্যাহত রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আমরা দেখতে পাচ্ছি। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মৌলবাদের উত্থান পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই অবস্থায় নাগরিকদের সোচ্চার হতে হবে। আমাদের সবার প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশে সুশাসন ও সবার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘বর্তমানে দেশে আমরা একদিনের নির্বাচন সর্বস্ব গণতন্ত্র দেখতে পাচ্ছি। একইসঙ্গে বেড়েছে দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতা। শুধুমাত্র অবকাঠামো উন্নয়নই উন্নয়ন নয়।’ বরং সর্বস্তরে উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারলেই বাংলাদেশে সুশাসন নিশ্চিত হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে সুজন ঢাকা জেলা ও মহানগর কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন যথাক্রমে এম এন ইসলাম তপন চৌধুরী এবং সেলিমা মসির। সম্মেলনে প্রকৌশলী মুসবাহ আলীম-কে সভাপতি ও আবুল হাসনাত কে সাধারণ সম্পাদক করে সুজন ঢাকা জেলা এবং এম এন ইসলাম তপন চৌধুরী-কে সভাপতি ও জোবায়েরুল ইসলাম নাহিদ-কে সাধারণ সম্পাদক করে সুজন মহানগর কমিটি গঠন করা হয়। সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে নতুন কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকৃবন্দকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।