সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক মূল প্রবন্ধ (Keynote papers) দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের আয় ও সম্পদের হিসাব প্রকাশ

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের আয় ও সম্পদের হিসাব প্রকাশ

সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক, ২৭ ডিসেম্বর-২০১৩
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৫ জানুয়ারি ২০১৪, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য সর্বমোট ১১০৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। মনোনয়নপত্র বাতিল ও প্রত্যাহারের পর ১৫৪টি আসনে একজন করে প্রার্থী থাকায়, তাঁরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকী ১৪৬টি আসনে সর্বমোট ৩৮৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সে অনুযায়ী, ৩০০ নির্বাচনী এলাকার সর্বমোট প্রার্থীর সংখ্যা ৫৪১ জন। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, প্রার্থীগণ মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা আকারে আট ধরনের তথ্য (আয়কর বিবরণীসহ) স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দাখিল করেছেন। ‘সুজন’-এর নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা তথা মৌলিক অধিকারের অংশ হিসেবেই বিষয়টি আইনে সন্নিবেশিত হয়েছে।

মোট ৫৪১ জন প্রার্থীর মধ্যে যাঁরা ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, উপনেতা, চীফ হুইপ ও হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং তাঁদের মধ্যে যাঁরা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাঁদের ২০০৮ ও ২০১৩-সালে প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে আয়, সম্পদ, দায়-দেনা, আয়কর সংক্রান্ত এবং পারিবারিক ব্যয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। আমরা ‘সুজন’ কর্তৃক বিশ্লেষণ করা তথ্যসমূহ গণমাধ্যমের সহায়তায় জাতির কাছে তুলে ধরতে চাই।

উপরিউক্ত বিশ্লেষণটি প্রার্থীদের হলফনামায় প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। অনেকের মতে, হলফনামায় অনেক তথ্য গোপন করা হয়েছে এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়া হয়েছে।

নিম্নে তথ্যের বিশ্লেষণ তুলে ধরা হলো :

প্রার্থী ও নির্ভরশীলদের আয় হ্রাস-বৃদ্ধির চিত্র:

প্রার্থীদের আয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, সর্বমোট ৪৮ জন প্রার্থীর আয় গড়ে ৫৮২% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির হার মাননীয় মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে ২৪৩%, মাননীয় প্রতিমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে ৪৬৮% এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা, চীফ হুইপ, হুইপদের ক্ষেত্রে ৩০৭১%। এছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও ডেপুটি স্পিকারের আয় বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১৩৬% ও ৪৪৩৫%।

শতকরা হারে নূর-ই-আলম চৌধুরীর ৩২৯৮৫%, আব্দুল মান্নান খানের ৮৪২২%, মোঃ মাহবুবুর রহমানের ৮০০৭%, ডেপুটি স্পিকার শওকত আলীর ৪৪৩৫% মোঃ হাছান মাহমুদের ২০৩৬% এবং মোঃ আফছারুল আমীনের আয় ২৪৮০% বৃদ্ধি পেলেও, টাকার অংকে সর্বোচ্চ নূর-ই-আলম চৌধুরীর ১৪ কোটি ৭৭ লক্ষ ৭২ হাজার ৮ শত ৮৭ টাকা, মোঃ আফছারুল আমীনের ৪৪ লক্ষ ৬৫ হাজার ৩ শত ২৮ টাকা, আব্দুল মান্নান খানের ৩ কোটি ২৪ লক্ষ ২৫ হাজার ২ শত ৩৭ টাকা, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদের ২ কোটি ৩ লক্ষ ২ হাজার ৮ শত ৮০ টাকা এবং মোঃ মাহবুবুর রহমানের ১ কোটি ৭২ লক্ষ ১৪ হাজার ৭ শত আয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে আবুল মাল আব্দুল মুহিত, গোলাম মোহাম্মদ কাদের, মজিবুর রহমান ফকির, ওমর ফারুক চৌধুরী ও আ স ম ফিরোজের আয় হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখ্য যে, গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের ২০১৩ সালের কোন আয় দেখানো হয়নি।

প্রার্থী ও নির্ভরশীলদের স¤পদ হ্রাস-বৃদ্ধির চিত্র:

প্রার্থীদের সম্পদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, সর্বমোট ৪৭ জন প্রার্থীর (ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরের হলফনামায় দেয়া সম্পদ সংক্রান্ত তথ্য অস্পষ্ট) সম্পদ গড়ে ৩৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির হার মাননীয় মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে ২০৬% (ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর ব্যতিত), মাননীয় প্রতিমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে ৪৫৯% এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা, চীফ হুইপ, হুইপদের ক্ষেত্রে ১৬৪৯%। প্রধানমন্ত্রীর সম্পদ ৪৬% এবং ডেপুটি স্পিকারের সম্পদ ২৩৮% বৃদ্ধি পেয়েছে।

শতকরা হারে আব্দুল মান্নান খানের সম্পদ ১০৯৯৭%,  নূর-ই-আলম চৌধুরীর ৬৪২৪%, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদের ৩৮৯২%, জনাব আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর ১৯৬৯%, মির্জা আজমের ১৪১৪% এ বি তাজুল ইসলামের ১৩৬০% শতাংশ এবং মোঃ মাহবুবুর রহমানের ১২৬৩% বৃদ্ধি পেলেও, টাকার অংকে সর্বোচ্চ নূর-ই-আলম চৌধুরীর সম্পদ ৪১ কোটি ৪৮ হাজার ৩৪৬ টাকা, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদের ১৪ কোটি ৮৫ লক্ষ ৭৪ হাজার ৭২৬ টাকা, আ ফ ম রুহুল হকের ১১ কোটি ২৯ লক্ষ ৭৬ হাজার ৭ শত টাকা, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ৭ কোটি ৭৪ লক্ষ ৫৯ হাজার ২০৬ টাকা, আব্দুল মান্নান খানের ৭ কোটি ৩৯ লক্ষ ৭৬ হাজার ১৪৫ টাকা, জাহাঙ্গীর কবির নানকের ৭ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ৬৩০ টাকা, মোঃ মাহবুবুর রহমানের ৭ কোটি ৫ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪ শত টাকা, খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ৫ কোটি ৪ লক্ষ ৭০ হাজার ১৭৪ টাকা, মুহাম্মদ ফারুক খানের ৪ কোটি ৩৭ লক্ষ ২৪ হাজার ৫২০ টাকা এবং ওমর ফারুক চৌধুরীর ৪ কোটি ৩৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও বিগত ৫ বছর কোটি টাকার অধিক সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে মতিয়া চৌধুরী, আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, রাজি উদ্দিন আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ, নূরুল ইসলাম নাহিদ, শাজাহান খান, মোঃ মুজিবুল হক, মেহের আফরোজ, দীপংকর তালুকদার, মোঃ শামসুল হক টুকু, মোঃ কামরুল ইসলাম, এডভোকেট প্রমোদ মানকিন, ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী, আব্দুস শহীদ এবং সেগুফতা ইয়াসমিনের।

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সম্পদের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। উল্লেখ্য, ২০০৮ এ হলফনামায় ঢাকায় চারটি ফ্ল্যাটের মূল্য উল্লেখ করলেও এবারে তা হলফনামায় করেননি।

প্রার্থীর দায়-দেনা হ্রাস-বৃদ্ধির চিত্র:

প্রার্থীদের মধ্যে অর্ধেকই বর্তমানে ঋণ গ্রহীতা। মনোনয়নপত্র দখিলের সময় ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন আ স ম ফিরোজ (২১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ২১৩ টাকা), মির্জা আজম (১০ কোটি ৫ লক্ষ টাকা), জাহাঙ্গীর কবির নানক (২ কোটি ৪৫ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা), এ বি তাজুল ইসলাম (২ কোটি ১১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৫৫২ টাকা), ড. আব্দুর রাজ্জাক (১ কোটি ৬৮ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা), আ ফ ম রুহুল হক (৮৩ লক্ষ টাকা)। ৪৭ জন (ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরের হলফনামায় দেয়া দায় দেনা সংক্রান্ত তথ্য অস্পষ্ট) প্রার্থীর মধ্যে ২০ জন বিগত নির্বাচনের সময় ঋণ গ্রহীতা ছিলেন না আর বর্তমানে ২৩ জন ঋণ গ্রহীতা নন। প্রসঙ্গত, ড. রাজ্জাকের ঋণের ক্ষেত্রে হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন থেকে গৃহীত ঋণের পরিমাণ ৯০ হাজার টাকা এবং ইউনিভার্সেল পোল্টি ফার্মের (যেখানে তাঁর মালিকানা ২০ শতাংশ) নামে গৃহীত ৯ কোটি ৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকার ২০ শতাংশ বা  ১ কোটি ৮১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা। উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে উক্ত পোল্টি ফার্মে জনাব ড. আব্দুর রাজ্জাকের পক্ষ থেকে কোনো অর্থ বিনিয়োগ করা হয়নি।

প্রার্থীর নীট স¤পদ হ্রাস-বৃদ্ধির চিত্র:

নীট সম্পদের দিক থেকে ৪৭ জন (ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীরের হলফনামায় দেয়া সম্পদ ও দায় দেনা সংক্রান্ত তথ্য অস্পষ্ট থাকায় নীট সম্পদ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি) প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক জনাব নূর-ই-আলম চৌধুরী। তাঁর নীট সম্পদের পরিমাণ ৪১ কোটি ৬৮ লক্ষ ৭২ হাজার ৭৭০ টাকা। জনাব নূর-ই-আলম চৌধুরী ছাড়াও প্রার্থীদের মধ্যে ১০ কোটি টাকার অধিক সম্পদের মালিকরা হচ্ছেন আ ফ ম রুহুল হক (১৫ কোটি ৫৪ লক্ষ ৭৪ হাজার ১৪৬ টাকা), মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ (১৫ কোটি ২৩ লক্ষ ৯১ হাজার ৮৭০ টাকা), সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (১১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৬৮ হাজার ৩৫৮ টাকা) এবং খন্দকার মোশাররফ হোসেন (১০ কোটি ৫০ লক্ষ ২৯ হাজার ৫০৮ টাকা)।

বর্তমানে ৬ জন প্রার্থীর সম্পদের চেয়ে দায়-দেনার পরিমাণ বেশি। উক্ত প্রার্থীগণ হচ্ছেন Ñ ড. আব্দুর রাজ্জাক, এ বি তাজুল ইসলাম, আ স ম ফিরোজ, ওমর ফারুক চৌধুরী, মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ও সেগুফতা ইয়াসমিন।

উল্লেখ্য, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নীট সম্পদ ৪৬% বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রার্থী প্রদত্ত আয়কর ও পারিবারিক ব্যয়ের চিত্র:

#  প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় সকলেই আয়করের আওতাভুক্ত হলেও ১২ জন (২৫%) প্রার্থীর আয়কর সংক্রান্ত কোনো কাগজ-পত্র পাওয়া যায়নি।
#   দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীগণের মধ্যে সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী প্রার্থীরা হচ্ছেন নূর-ই-আলম চৌধুরী (৯৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ৪৯৪ টাকা), খন্দকার মোশাররফ হোসেন (৩০ লক্ষ ৮১ হাজার ১৬৭), আ ফ ম রুহুল হক (১২ লক্ষ ১৯ হাজার ৫২১ টাকা), ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর (৯ লক্ষ ৪৯ হাজার ৭২৭ টাকা) ও মোঃ আব্দুল হাই (৯ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৫১ টাকা)।

‘সুজন’ দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য একত্রিকরণ ও বিশ্লেষণ করে ভোটারদের জ্ঞাতার্থে তুলে ধরে আসছে। ভোটাররা যাতে প্রার্থীদের স¤পর্কে জেনে, শুনে, বুঝে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থী নির্বাচিত করেন সে লক্ষ্যেই এই কার্যক্রম। বিগত জুনের সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের সময় থেকে এই কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। যে প্রার্থীদের ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়, ৫ বছর দায়িত্ব পালনের পর তাঁদের আয়, স¤পদ, দায়-দেনা, আয়কর প্রদান, পারিবারিক ব্যয় ইত্যাদির অবস্থা কী, তার চিত্রও গণমাধ্যমের সহায়তায় জনসমক্ষে তুলে ধরার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় সুজন-এর পক্ষ থেকে। এর মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধিরা কতটুকু জনস্বার্থে এবং কতটুকু নিজ ও গোষ্ঠীস্বার্থে কাজ করেছেন তা সাধারণ জনগণ বুঝতে পারে। ঐ কার্যক্রমের চলমান প্রক্রিয়া হিসাবে আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।

আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, উপনেতা চিফ হুইপ ও হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীদের যাঁরা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তাঁদের ২০০৮ ও ২০১৩ সালে হলফনামায় প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে আয়, সম্পদ, দায়-দেনা, আয়কর ও পারিবারিক ব্যয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে তা তুলে ধরা হলো। প্রার্থীদের অনেকের অনেক তথ্যই আমাদের মত অনেককেই বিস্মিত করেছে। কেউ কেউ মনে হয় আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়ে গিয়েছেন। অথচ সাধারণ জনগণের প্রত্যাশা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনস্বার্থে কাজ করবেন।

ভোটাধিকার প্রয়োগের পাশাপাশি নাগরিকরা যদি তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন, সংগঠিত ও সোচ্চার না হন তবে জনপ্রতিনিধিরাও যথেচ্ছাচারে লিপ্ত হয়। তাই ভোটারদেরকে যেমন প্রার্থীদের সম্পর্কে জেনে, শুনে, বুঝে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে, তেমনি জনপ্রতিনিধিদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সচেষ্ট থাকতে হবে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৮৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও আমরা মাত্র ৪৮ জন প্রার্থীর তথ্য তুলে ধরছি এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে, যারা অতীতে নির্বাচিত হয়ে প্রজাতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে অনেক জনপ্রতিনিধির সম্পদ বৃদ্ধির চিত্র মানুষের মধ্যে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে আমরা এই ধারার পরিবর্তন দেখতে চাই।

৫ জানুয়ারি ২০১৪-এ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একটি  প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন। গুটিকয়েক রাজনৈতিক দল ও স্বল্প সংখ্য প্রার্থী নিয়ে এই নির্বাচন। ফলে এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যেও তেমন আগ্রহ নেই। তারপরেও আমরা প্রতিদ্বন্দ্বী কিছু প্রার্থীর তথ্য গণমাধ্যমের সহায়তায় ভোটারদের মাঝে প্রকাশ করছি। আশা করি এই সংবাদ সম্মেলন প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটাদের জানা-বুঝার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।

তথ্যসূত্র: বিশ্লেষণে ব্যবহৃত তথ্যগুলোর সূত্র নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট (িি.িবপং.মড়া.নফ). তথ্যসমূহ সন্নিবেশনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। তা সত্বেও এসব তথ্যের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যের কোনো অসঙ্গতি পাওয়া গেলে কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্যই সঠিক বলে ধরে নিতে হবে।

২৭ ডিসেম্বর-২০১৩

Related Post

‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ, জেন্ডার গ্যাপ ও আরও কিছু প্রশ্ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ, জেন্ডার গ্যাপ ও আরও কিছু প্রশ্ন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সংবিধানে বর্ণিত ভোটার-তালিকা প্রস্তুকরণের তত্ত্বাবধান, নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ’ করার দায়িত্ব পালনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভোটার তালিকায় জেন্ডার গ্যাপের মত একটি গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে, যে কারণে অনেক

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অশগ্রহণকারী প্রার্থীগণের তথ্যের বিশ্লেষণ (বিস্তারিত প্রতিবেদন)দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অশগ্রহণকারী প্রার্থীগণের তথ্যের বিশ্লেষণ (বিস্তারিত প্রতিবেদন)

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৫ জানুয়ারি, ২০১৪ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ৩০০ সংসদীয় আসনে সর্বমোট ১১০৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা

‘গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত‘গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত

আসন্ন গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে আয়োজনের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সংগঠন ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর নেতৃবৃন্দ। তারা ০৩ মে ২০১৮, সকাল ১১.০০টায়, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে