রাজশাহী চেম্বার ভবন সম্মেলন কক্ষে গত ৯ নভেম্বর ২০১৩ সকাল ১০ টায় অনুষ্ঠিত হয় সুজন রাজশাহী বিভাগীয় পরিকল্পনা সভা। পরিকল্পনা সভা শুরুর পূর্বে রাজশাহী জেলা, মহানগর এবং মেট্রো থানাসমূহের নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্টিত হয়। নবনির্বাচিত সদস্যদের ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করেন কেন্দ্রীয় সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নাগরিক দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে সদস্যগণ শপথ গ্রহণ করেন। সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. জালাল উদ্দিন সরদারের সভাপতিত্বে সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে উপসি’ত ছিলেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। সুজনের কেন্দ্রূীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চলনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুজন রাজশাহী মহানগর কমিটির সভাপতি জায়তুনা খাতুন।
সভায় ড.বদিউল আলম মজুমদার দেশের বর্তমান পরিসি’তি ও আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করেন এবং সুশাসন অর্জনের জন্য সুজন কী ধরণের কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারে তার জন্য উপসি’ত সকলের মতামত নেন। সভায় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন সুজনের প্রতিনিধিগণ কর্তৃক ২০১৩ সনের কার্যক্রমের প্রতিবেদন ও ২০১৪ সালের কার্যক্রমের পরিকল্পনা উপস’াপন করা হয়। সভায় রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৭৮ জন সুজন সদস্য অংশগ্রহণ করেন।
সভায় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন সুজনের প্রতিনিধি কর্তৃক ২০১৩ সনের কার্যক্রমের প্রতিবেদন ও ২০১৪ সালের কার্যক্রমের পরিকল্পনা উপস’াপন করা হয়। সভায় রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৭৮ জন সুজন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। সভায় বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ জেলা সুজন কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল হালিম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কমিটির সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন, রাজশাহী জেলা সম্পাদক মাহমুদুল আলম মাসুদ, মহানগর সম্পাদক ডা. মো. হেমায়েতুল ইসলাম আরিফ, নাটোর জেলা সম্পাদক রওশন আরা শ্যামলী, চারঘাট উপজেলা সুজনের সভাপতি প্রফেসর ডা. রফিকুল আলম, মোহনপুর উপজেলা সভাপতি আসাদ আলী প্রমূখ।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিরাজমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ’সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন:নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক আলোচনার সূত্রপাত করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, স্বাধীনতা অর্জন করতে মূল্য দিতে হয়। স্বাধীনতার সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে হলে আমাদের নাগরিকদেরকে সক্রিয়, সোচ্চার হতে হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের যথাযথ করণীয় ঠিক করতে হবে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস’া কি হবে তা নিয়ে সৃষ্ট সমস্যাটা জনগণ সৃষ্টি করেনি, করেছে বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল। তাই এ সমস্যার সমাধানে দুটি দলকে বাধ্য করার জন্য নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
অংশগ্রহণকারীগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণ সামপ্রতিক রাজনৈতিক পরিসি’তি নিয়ে আলাপ আলোচনা করেন এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির উত্তরণে নিজেদের করণীয় ঠিক করেন।
অংশগ্রহণকারীগণ
*এক তরফা নির্বাচন অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অগ্রহণযোগ্য হবে বলে মতামত দেন;
* নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস’া সম্পর্কিত সুজন ফর্মূলা নিয়ে দুই নেত্রীর সঙ্গে বসার পরামর্শ দেন;
*ভোটারদেরকে প্রার্থী সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা দেয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের তথ্য সংগ্রহ করা উচিত বলে মত দেন;
* সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য নিজ নিজ এলাকায় কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান- নেন। যে সব এলাকায় ইতোমধ্যে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী আক্রান- হয়েছে সে সব এলাকায় সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানো এবং ভবিষ্যতে যাতে তাদের কোনো ক্ষতি হতে না পারে তার জন্য আগাম ব্যবস’া নেয়ার সিদ্ধান- নেন।
* সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সুজনের সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার বিষয়ে ঐক্যমত্য পোষণ করেন;
*জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস’া নিয়ে সৃষ্ট সংকটের উত্তরণে সংলাপ ও সমাধানের উদ্যোগ অব্যাহত রাখবেন বলে সিদ্ধান- নেন;
*নতুন ভোটারদের মধ্যে নাগরিক দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করা এবং তরুণ প্রজন্মের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড, গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য সুজনের প্রতি আহ্বান জানান।
সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অংশগ্রহণকারী নিজ নিজ কর্মপরিকল্পনা করেন। তারা জেলা-উপজেলা কমিটি গঠন, সুজন বন্ধু কমিটি গঠন, নতুন ভোটারদের নিয়ে কর্মশালা, মানব বন্ধন, সমাবেশ, আলোচনা সভা, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জনগণের মুখোমুখি করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে স্থানীয় পর্যায়ে প্রশাসন, সুশীল সমাজের সাথে মতবিনিময়, সংখ্যালঘুদের সাথে মতবিনিময়, প্রার্থীদের হলফনামায় তথ্য সংগ্রহ, নতুন সদস্য সংগ্রহ প্রভৃতি বিষয়ে পরিকল্পনা করেন।
অংশগ্রহণকারীগণ সমাজে সুশাসন বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিমূলক কাজ অব্যাহত রাখার উপর জোর দেন। রাজশাহী বিভাগের প্রতিটি ইউনিয়নে সুজন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সুজন সচিবালয়কে আহ্বান জানান তারা।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিরাজমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাজশাহী বিভাগীয় পরিকল্পনা সভা
Categories: