সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক গোলটেবিল বৈঠক ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

????????????????????????????????????

‘বিগত বছরগুলোতে ব্যাংকিং খাতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে, যা নিয়ে জনমনে তৈরি হয়েছে আস্থাহীনতা ও উৎকণ্ঠা। দেশের অর্থনীতির কল্যাণে এ সকল অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা আজ অত্যন্ত জরুরি’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদগণ। তাঁরা আজ ২১ এপ্রিল ২০১৬ জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর উদ্যোগে ‘ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।

সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনায় অংশ নেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা জনাব মির্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আবু আহমেদ, সুজন নির্বাহী সদস্য জনাব আলী ইমাম মজুমদার ও ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. সাজ্জাদ জহির, জনাব নুরুল হক মজুমদার, আব্দুল্লাহ ক্বাফী রতন প্রমুখ।

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফিনএক্সেল-এর চেয়ারম্যান ও অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমদ। তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম বাধা। নিকট অতীতে পুঁজিবাজার, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্র“প, বেসিক ব্যাংক ও ডেসটিনি কেলেঙ্কারি সাথে সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা চুরির ঘটনা। ভবিষ্যতে এ সকল ঘটনা উত্তরণে এবং ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এ খাতের বিদ্যমান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে প্রয়োজন সমস্যাগুলো উত্তরণে করণীয় নির্ধারণ করা।’

তিনি প্রবন্ধের শুরুতে ব্যাংকিং খাতে বিদ্যমান কিছু সমস্যা তুলে ধরেন। সমস্যাগুলো হলো- ১. বিনিয়োগ না বাড়ায় ব্যাংকগুলোতে প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত পড়ে থাকা; ২.ব্যাংকগুলো যে ঋণ দিচ্ছে তা আদায় করতে না পারা, কিংবা কাকে ঋণ দেয়া হবে তা নিয়ে সংকট তৈরি হওয়া; ৩. ব্যাংকিং খাতের নানা অনিয়ম ও জালিয়াতি; ৪. ব্যাংকগুলোর কেবল লাভের পেছনে ছোটা; ৫. বিপুল অঙ্কের খেলাপি ও মন্দ ঋণ, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে; ৬. ব্যাংকগুলোর আইটি সিস্টেম সুরক্ষিত না থাকা; ৭. মূলধন ঘাটতি, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে; ৮. আমানত সংগ্রহে অসম প্রতিযোগিতা; ৯. ব্যবস্থাপনার সংকট, বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর; ১০. সরকারি এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে পরিচালকদের অযাচিত হস্তক্ষেপ; ১১. বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে সিবিএ নেতাদের দৌরাত্ম্য।

সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমদ বলেন, ‘গত দেড় দশকে ব্যাংকিং খাতে নয়টি বড় ধরনের আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। আর গত সাত বছরে ঘটা ছয়টি বড় আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি চুরি বা আত্মসাৎ করা হয়েছে। বড় এসব আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষ। কিন্তু একটি কেলেঙ্কারিরও বিচার হয়নি। উল্লেখযোগ্য কারো শাস্তি হয়নি এখনও।’ এ সময় তিনি ব্যাংকিং খাতে ঘটে যাওয়া নয়টি বড় কেলেঙ্কারির বিস্তারিত বিবরণ এবং ছোট-খাট আরও কিছু অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সরকারি ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর জন বড় সমস্যা। নিরাপত্তাহীনতা এবং বিনিয়োগের যথাযথ পরিবেশ না থাকায় সুইস ব্যাংকে বেড়েছে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থ।’ এ সময় তিনি রাজনৈতিক বিবেচনায় নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া এবং রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ দেয়ার সমালোচনা করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান দুটি কাজ হচ্ছে- ১. স্থিতিশীল মুদ্রানীতি পরিচালনা এবং ২. ব্যাংক খাতের ওপর তদারকি-নজরদারির ভিত্তিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু রিজার্ভের পরিমাণ বৃদ্ধি করা ছাড়া (যদিও রিজার্ভের কৃতিত্ব অনেকটাই প্রবাসী শ্রমিকদের) উপরোক্ত উল্লেখযোগ্য সফলতা দেখাতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’ এছাড়া নিকট অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রবন্ধের শেষভাগে তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো ব্যাংকিং খাত। তাই অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ করে এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কিছু করণীয় রয়েছে। করণীয়গুলো হলোÑ ১. ব্যাংকিং কমিশন গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া; ২. কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংস্কার ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা; ৩. বেসরকারি ব্যাংকে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা; ৪. ব্যাংকিং খাতের জালিয়াতি বন্ধ করা; ৫.আর্থিক স্বচ্ছতার জন্য অভ্যন্তরীণ অডিট করা; ৬. পরিচালক নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠন; ৭. ব্যাংকিং খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা; ৮. অতীতের বিভিন্ন তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনগুলো বাস্তবায়ন করা; ৯. ট্রেড ইউনিয়নের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা ১০. সৎ-নিষ্ঠাবান কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করা; ১১. খেলাপি ঋণ রোধে ট্রাইব্যুনাল গঠন; ১২. যথাযথ প্রক্রিয়ায় ঋণ অনুমোদন করা; ১৩. আর্থিক বিধি-বিধানগুলো অনুসরণ করা; ১৪. মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নিরাপদ করা; ১৫. টাকা পাচার রোধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা; ১৬. ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সাথে মতবিনিময় করা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য জনগণের জন্য উন্মুক্ত রাখা; ১৭. সচেতনতা বৃদ্ধি করা।

এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে অত্যন্ত বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছে। এ খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। কি কারণে আজ এ অবস্থা তা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। দলীয়করণ ও রাজনীতি ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক এর কর্তৃত্ব ও নজরদারি অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর আছে কি না সে বিষয় নিয়েও সন্দেহ পোষণ করেন।’

মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা যে কম আছে তা নয়, ক্ষমতা যতটুকু আছে তার কতটুকু প্রয়োগ করছে তা বিবেচ্য বিষয়। ক্ষমতার প্রয়োগের জন্য যথাযথ ও যোগ্য লোক নিয়োগ প্রদান করতে হবে। তিনি ব্যাংকিং খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অডিট নিয়মিত করা, ব্যাংকগুলো যাতে বড় ধরণের ঝুকির মধ্যে না পড়ে সেদিকে নজর রাখা, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে কাকে ঋণ প্রদান করা হবে সেটি বিবেচনায় আনা, ঋণ আবেদনকারীর তথ্য সঠিকভাবে যাচাই করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক এর নীতিমালা যা আছে তা আর্ন্তজাতিক মানের কিন্তু নিয়ম/নীতিমালা আমাদেরকে পালন করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংককে অন্যান্য ব্যাংকসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে আবার বেশি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, একটা ভারসাম্য রাখতে হবে। এছারাও সৎ, যোগ্য ও দক্ষ মানুষকে নিয়োগ প্রদান করতে হবে। আর্থিক খাতের অনিয়মের জন্য বিচার করতে হবে তাহলে বারবার এরকম দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।’ তিনি আরো বলেন, ‘আর্থিক খাতের মত একটি খাতে যদি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয় তাহলে তা ধ্বংস হতে বাধ্য। তিনি ঋণ প্রদান কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, সবমসময় টাকাওয়ালাদের ঋণ প্রদান করা হয়। কিন্তু তা না করে নতুন নতুন উদ্যোক্তা ও মহিলাদের ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।’

ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের আর্থিক খাতে বিচারহীনতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে, আর এ অবস্থা চলতে থাকলে রিজার্ভের টাকা চুরি, বেসিক ব্যাংক, হলমার্ক ও পুঁজি বাজার কেলেঙ্কারীর মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।’

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অযাচিত সব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে দু:খ প্রকাশ করে অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এর রিজার্ভ চুরির ঘটনা অতীতে কখনো ঘটেনি, অন্যান্য দেশেও এরকম ঘটেছে বলে আমার অন্তত জনা নেই। আর্থিক খাতের দুর্নীতিরোধে যাদের দায়িত্ব রয়েছে তাদের অনেকেই দুর্নীতির সাথে জড়িত বলে তিনি মন্তব্য করেন। ব্যাংকিং খাতের এ হতাশাজনক অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য নতুন গর্ভনর যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং খাতে বা আর্থিক খাতে না সকল খাতেই বিচারহীনতা বিরাজ করছে। অন্যায় করে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি বিরাজ করছে। তবে আশার কথা যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির বিষয়ে যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে তারা যথাসময়ে তাদের প্রতিবেদন পেশ করেছে।

ড. সাজ্জাদ জহির বলেন, অর্থখাতের যে পরিবর্তনগুলো সারা বিশ্বব্যাপী ঘটছে তার সাথে সঙ্গতি রেখে আমাদের দেশের ব্যাংকিং খাতের পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। আমাদের সেই দক্ষ জনবল নেই যারা প্রযুক্তির ওপর প্রভাব রাখে। প্রযুক্তির পরিবর্তনের কারণে যে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন আনা প্রয়োজন তা করা হচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মূল প্রবন্ধ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

Related Post

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন ও সুষ্ঠু নির্বাচনগণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন ও সুষ্ঠু নির্বাচন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আসন্ন। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কেননা, সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা

'‌নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক'‌নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অর্থবহ নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও আইনের গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আবশ্যক। সংস্কারের একটি খসড়া প্রস্তাব নিয়ে কমিশন

সুজন-এর উদ্যোগে ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকসুজন-এর উদ্যোগে ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

‘বিরাজমান সাংবিধানিক কাঠামোই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতা’: সুজন নেতৃবৃন্দ ‘আমাদের বিরাজমান সাংবিধানিক কাঠামোই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের পথে একটি অন্তর্নিহিত প্রতিবন্ধকতা। এমতাবস্থায় এমনকি সবচেয়ে স্বাধীন, শক্তিশালী