সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক Uncategorized রংপুরে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন:নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব শীর্ষক কর্মশালা

রংপুরে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন:নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব শীর্ষক কর্মশালা

নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা কি হবে, তা নিয়ে দেশের বৃহৎ দুটি দল ঐকমত্যে পৌঁছতে না পারায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনিশ্চয়তার মুখে। আওয়ামী লীগ এবং তাদের ১৪ দলীয় জোট বলছে সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। বিএনপি এবং তাদের ১৮ দলীয় জোটের দাবী নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস’া নিয়ে সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছার পরিবর্তে দমন-পীড়ন, সহিংস হরতাল-হানাহানিতে লিপ্ত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং সাধারন জনগণ দু’টি প্রধান জোটের মধ্যে সংলাপ এবং সমঝোতার দিকে তাকিয়ে আছে।বিরাজমান এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ৮ নভেম্বর ২০১৩ শুক্রবার বিকাল ৩ টায় রংপুর জেলা ও মহানগর সুজন কমিটি কর্তৃক স’ানীয় হোটেল তিলোত্তমায় অনুষ্ঠিত হয় ’সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন: নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব’ শীর্ষক রংপুর বিভাগীয় কর্মশালা। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সুজন রংপুর জেলার সভাপতি এডভোকেট দীপক কুমার সাহা। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুজন রংপুর সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন। কর্মশালা পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার।

কর্মশালায় ড.বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের গণতন্ত্র শুরু হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচিত হয়ে সরকার ৫ বছর দেশ পরিচালনা করে। এই ৫ বছরের কার্যক্রম এবং আচরণের উপর নির্ভর করে গণতন্ত্র কতটা সঠিক পথে এগুচ্ছে। রাজনীতি হওয়া উচিত জনগণের স্বার্থে এবং নির্বাচন হতে হবে সকল দলের জন্য সমান সুযোগ রেখে সকল দলের অংশগ্রহণে। নির্বাচন যদি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক না হয়, দেশে-বিদেশে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের শর্ত পূরণ করতে হলে দেশের প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওযামী লীগ, বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। দুটি বড় দল যাতে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে সেজন্য সুজন কেন্দ্রীয়ভাবে চেষ্টা করছে সংলাপ, সংবাদ সম্মেলন, গোলটেবিল বৈঠক, মানব বন্ধন, বিবৃতি প্রদানের মাধ্যমে। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস’া নিয়ে একটি ফর্মুলাও দিয়েছে সুজন যা ইতোমধ্যে অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে উল্লেখ করেন সুজন সম্পাদক।

তিনি বলেন, দেশের নাগরিকরা সচেতন, সক্রিয় এবং সোচ্চার হলে দেশে গণতন্ত্র কায়েম হওয়া সম্ভব। বর্তমান সংকটে নাগরিকদের অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। নাগরিকদের সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শুধু সমালোচনায় না থেকে কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান। তিনি নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান, পরিসি’তির শিকার না হয়ে পরিসি’তির ইতিবাচক পরিবর্তনে প্রত্যেকে প্রত্যেকের অবস’ান থেকে উদ্যোগী হওয়ার। এ রকম পরিসি’তিতে নাগরিকদের দায়িত্ব এবং করণীয় কি হওয়া উচিত এ সম্পর্কে কর্মশালায় উপসি’ত রাজশাহীর সচেতন নাগরিকদের মতামত দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মানবাধিকার ও পরিবেশ আন্দোলন, রংপুরের প্রধান নির্বাহী মুনীর চৌধুরী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ. রেজিস্ট্রার মোরশেদুল আলম রনি, বাংলাদেশ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি, রংপুরের সভাপতি এডভোকেট নার্গিস মোর্শেদা, সনাক সদস্য মোশফিকা রাজ্জাক, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শরীফা সালোয়া ডিনা, সেক্টরস কমান্ডার্স ফোরাম, রংপুরের সভাপতি মোজাফফর হোসেন চাঁদ, রঙ্গপুর গবেষণা পরিষদের সহ সভাপতি এডভোকেট সাফিয়া খানম, সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের সহ. অধ্যাপক আজহারুর ইসলাম এবং বাংলা বিভাগের ড. তুহিন ওয়াদুদ, ইটিভির লিয়াকত আলী বাদল, তরুণ নিশাত আরেফিনসহ রংপুরের বিশিষ্ট নাগরিকগণ তাদের মতামত তুলে ধরেন।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণ সামপ্রতিক রাজনৈতিক পরিসি’তি নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। জাতীয় নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস’া নিয়ে সৃষ্ট সংকটের উত্তোরণে সংলাপ ও সমাধানের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। খারাপ মানুষ যাতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারে, জয়ী হতে না পারে সে জন্য সুজনের নেতৃত্বে দেশের সচেতন মানুষদের নাগরিক দায়িত্ব পালনের জন্য জোর দেন। দল নিরপেক্ষ এবং দেশের জনপ্রিয় সংগঠন হওয়ায় সুজনের সাংগঠনিক কাঠামো ইউনিয়ন পর্যন- বিস-ৃত করার পরামর্শ দেন অংশগ্রহণকারীগণ। দশম জাতীয় নির্বাচন এক তরফা হলে সে নির্বাচনকে অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন অধিকাংশই। দমন-পীড়ন, হানাহানির রাজনীতির প্রতি ঘৃনা প্রকাশ করেন এবং ইতিবাচক রাজনীতির অগ্রযাত্রার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণ সুজনের প্রতি আহ্বান জানান,
ক্স ন্বেচ্ছাচারী এবং এক গুয়েমী রাজনীতির অবসানে সুশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে আরো বেগবান করার জন্য;
ক্স দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানোর উদ্যোগ নেয়ার জন্য;
ক্স সুজন যাতে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে রাজনৈতিক সংস্কারে তাদের চাপ অব্যাহত রাখে;
ক্স ’না’ ভোটের বিধান ফিরিয়ে আনার;
ক্স নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করায় উদ্যোগী হওয়ার;
ক্স অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী সুজনের আহ্বানে মানব বন্ধন করার;
ক্স ভোটারদেরকে প্রার্থী সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারনা দেয়ার লক্ষ্যে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের তথ্য সংগ্রহ করার;
ক্স সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিগ্রস- এলাকায় কার্যক্রম গ্রহণ করার;
ক্স সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার;
ক্স সমাজে বিশেষত তরুণ প্রজন্মের মাঝে গণতন্ত্র ও সুশাসন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নির্বাচনী অলিম্পিয়াড, গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড, বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করার;
ক্স প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়মিত জনগণের মুখোমুখি করার
সকল দলের অংশগ্রহণেই কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব – এ মতামত ব্যক্ত করেন প্রায় সকলেই। নির্বাচন ইস্যুতে দুই প্রধান দলের দুই নেত্রী ৫ বছর অন-র অন-র জাতিকে অহেতুক কষ্ট দিবেন, অনিশ্চয়তায় রাখবেন, জনভোগানি-র পরিবেশ তৈরি করবেন এটা কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয় বলে উল্লেখ করেন এবং নির্বাচন পদ্ধতির একটি স’ায়ী সমাধান খুঁজে বের করার জন্য অনুরোধ জানান। নাগরিকদেরকে বিভ্রানি-র মধ্যে রেখে অপরাজনীতির কৌশল পরিত্যাগ করে জনকল্যাণমূলক রাজনৈতিক ধারায় ফেরার জন্য রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান।

Related Post

ইসি অসত্য ও অর্ধ-সত্য তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে বিভ্রান্তি – সৃষ্টি করেছেইসি অসত্য ও অর্ধ-সত্য তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে বিভ্রান্তি – সৃষ্টি করেছে

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গত ২৮ জুলাই নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত একটি ‘সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’র প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে: “সমপ্রতি সুজন নামের একটি সংস্থার পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে

সুজন-এর আয়োজনে ঘিওরে প্রার্থী ও ভোটারদের নিয়ে মুখোমুখি অনুষ্ঠানসুজন-এর আয়োজনে ঘিওরে প্রার্থী ও ভোটারদের নিয়ে মুখোমুখি অনুষ্ঠান

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও ভোটারদের নিয়ে গতকাল রোববার ‘জনগণের মুখোমুখি’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্রাঙ্গণে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠান বিকেল