সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক (৯ জানুয়ারি ২০১১) www.votebd.org; www.shujan.org
মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার অনেক দিন পর এবং অনেক দাবির মুখে অবশেষে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১২, ১৩, ১৭, ১৮ ও ২৭ জানুয়ারি ২০১১ দেশের ২৫৭টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী বিধি অনুয়ায়ী প্রার্থীগণ মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামা আকারে ৭ ধরনের তথ্য রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে দাখিল করেছেন। প্রসঙ্গত, সুজনে’র প্রচেষ্টার ফলেই নাগরিকদের তথ্যপ্রাপ্তির এ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং উচ্চ আদালত এটিকে ভোটারদের মৌলিক অধিকার বলে স্বীকৃতি
দিয়েছেন।
আমরা সুজনে’র উদ্যোগে প্রার্থীদের দেওয়া তথ্যসমূহ বিশ্লেষণ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতায় জনগণের কাছে তুলে ধরছি। এ বিশ্লেষণের ভিত্তি হলো নির্বাচন কমিশনের সূত্র থেকে পাওয়া প্রার্থীদের প্রদত্ত তথ্য। এসকল তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি মেয়র প্রার্থীদের তুলনামূলক চিত্র প্রত্যেকটি পৌরসভায় ভোটারদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও শতাধিক পৌরসভায় সুজনে’র উদ্যোগে ‘ভোটার-প্রার্থী’ মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রার্থীগণ তাদের হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা/জীবিকা, অতীতে এবং বর্তমানে ফৌজদারী মামলা হয়েছে কি না, প্রাথী এবং প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের অস্থাবর ও স্থাবর সম্পদের বিবরণ, প্রার্থীর ঋণ সংক্রান্ত তথ্য, কর প্রদানের তথ্য জমা দিয়েছেন। এ সকল তথ্য প্রদানের উদ্দেশ্য হলো ভোটারদেরকে ক্ষমতায়িত করা, যাতে তারা জেনে-শুনে-বুঝে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।
সুজন বহুদিন থেকেই আমাদের স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার বিষয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি যে, একটি বলিষ্ঠ বিকেন্দীকরণ কর্মসূচীর মাধ্যমে ক্ষমতা, দায়-দায়িত্ব ও সম্পদ হস্তান্তরের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়বদ্ধ করা এবং একইসাথে এগুলোতে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিদের নির্বাচিত হয়ে আসার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া আবশ্যক। এলক্ষ্যেই গত প্রায় একদশক থেকে সুজনে’র কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে।
অদ্যাবধি নির্বাচন কমিশন থেকে আমরা ২১২ টি পৌরসভার ১০৭৮ জন মেয়র প্রার্থীর হলফনামায় দেওয়া তথ্য সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছি, যেখানে নারী প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র ১০ জন। ২১২টি পৌরসভার চূড়ান্ত মেয়র প্রার্থীদের বিশ্লেষণকৃত তথ্যসমূহ বিভাগ অনুয়ায়ী নিম্নে প্রদত্ত হলো:
শিক্ষাগত যোগ্যতা
বিভাগ | পৌরসভা | যে কয়টা পৌরসভার তথ্য যোগাড় করা গেছে | এসএসসির নীচে |
এসএসসি | এইচএসসি | স্নাতক | স্নাতকোত্তর | উল্লেখ নাই |
মোট |
রাজশাহী | ৪৯ | ৪৯ | ৪৪ | ৪৬ | ৫২ | ৭৩ | ৫২ | ১ | ২৬৮ |
রংপুর | ২৪ | ২৩ | ২০ | ৩০ | ২৫ | ৪৯ | ১৬ | ৩ | ১৪৩ |
ঢাকা | ৬৭ | ৬৩ | ৬১ | ৪৬ | ৫৪ | ৯৯ | ৩২ | – | ২৯২ |
খুলনা | ৩২ | ২৫ | ৪০ | ২৫ | ২০ | ২৭ | ৮ | ৪ | ১২৪ |
বরিশাল | ২১ | ১৬ | ৭ | ৯ | ১৭ | ২০ | ৯ | – | ৬২ |
চট্টগ্রাম | ৫০ | ২৩ | ২৬ | ২০ | ৩২ | ৩৭ | ১৭ | – | ১৩২ |
সিলেট | ১৬ | ১৩ | ২২ | ৫ | ৮ | ১২ | ১০ | – | ৫৭ |
মোট | ২৫৯ | ২১২ | ২২০ (২০.৪০%) |
১৮১ (১৬.৭৯%) |
২০৮ (১৯.২৯%) |
৩১৭ (২৯.৪১%) |
১৪৪ (১৩.৩৬%) |
৮ (০.৭৪%) |
১০৭৮ (১০০%) |
তথ্য সূত্র: নির্বাচন কমিশন
- পৌরসভা প্রতি চূড়ান্ত মেয়র পদপ্রার্থীর সংখ্যা গড়ে প্রায় ৫.০৮ জন। দলভিত্তিক নির্বাচনের ফলে প্রার্থীর গড় সংখ্যা কমে গিয়েছে বলে আমাদের আশংকা। অনেক জায়গায় ২/৩ জনের বেশী প্রার্থী নেই। প্রসঙ্গত, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নয়টি পৌরসভা মনেনেয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৬৯ জন (বা গড়ে পৌরসভা প্রতি ৭.৬৬ জন) এবং চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৯ জন (বা বা গড়ে পৌরসভা প্রতি ৬.৫৫ জন)।
- সীমিত সংখ্যক প্রার্থীর মধ্যেও বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ি লক্ষনীয়। খুব কম সংখ্যক পৌরসভা আছে যেখানে একই দলের, বিশেষত ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থী নেই। যেখানে জোর করে দলের অন্যান্য প্রার্থীদেরকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেখানেও গৃহবিবাদ থামেনি। ইতোমধ্যে দলীয় কোন্দলের কারণে ঝিনাইদহতে ৩ যুবলীগ কর্মী প্রাণ হারিয়েছে।
- প্রার্থী মনোনয়নে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তৃণমূলের দলীয় নেতা-কর্মীদের মতামত নেওয়া হয়নি এবং এব্যাপারে কোন বিধি-বিধানও নেই। মাননীয় সংসদ সদস্য ও অন্যান্য প্রভাবশালী দলীয় নেতাদের পছন্দই অগ্রাধিকার পেয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগও উঠেছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষনার বাইরেও আরও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ পৌরসভা রয়েছে।
- জোটভিত্তিক নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি কার্যকর হয়নি। জাতীয় প্রার্থীকে ছাড় দেওয়া ১৯টি পৌরসভার মধ্যে অন্তত ১৮টি অওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রয়েছে।
- মোট ১০৭৮ পজন মেয়র পদপ্রার্থীর মধ্যে মাত্র ১০ জন নারী প্রার্থী, যা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য কোনোভাবেই ইতিবাচক নয়।
- চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১০৭৮ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ১৩.৩৬% প্রার্থী স্নাতকোত্তর, ২৯.৪১% স্নাতক, ১৯.২৯% এইচএসসি, ১৬.৭৯% এসএসসি ডিগ্রীধারী এবং ২০% এসএসসির নীচে। অর্থাৎ এক-তৃতীয়াংশের বেশি মেয়র পদপ্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি কিংবা তার নীচে।
পেশা সংক্রান্ত তথ্য:
বিভাগ | পৌরসভা | যে কয়টা পৌরসভার তথ্য যোগাড় করা গেছে | কৃষি | ব্যবসা | চাকুরি | আইনজীবী | গৃহিনী | অন্যান্য | মোট |
রাজশাহী | ৪৯ | ৪৯ | ৪১ | ১৭৫ | ৩৮ | ৮ | ২ | ৪ | ২৬৮ |
রংপুর | ২৪ | ২৩ | ১৪ | ১০৪ | ১৬ | ৩ | ১ | ৫ | ১৪৩ |
ঢাকা | ৬৭ | ৬৩ | ৪৮ | ২০১ | ১৬ | ১৭ | – | ১০ | ২৯২ |
খুলনা | ৩২ | ২৫ | ১০ | ৯৫ | ৯ | ৮ | ১ | ১ | ১২৪ |
বরিশাল | ২১ | ১৬ | ৫ | ৪৭ | ৪ | ৪ | – | ২ | ৬২ |
চট্টগ্রাম | ৫০ | ২৩ | ১৩ | ৯৪ | ১৬ | ৪ | – | ৫ | ১৩২ |
সিলেট | ১৬ | ১৩ | ৭ | ৩৬ | ৮ | ২ | – | ৪ | ৫৭ |
মোট | ২৫৯ | ২১২ | ১৩৮ (১২.৮০%) |
৭৫২ (৬৯.৭৬%) |
১০৭ (৯.৯২%) |
৪৬ (৪.২৭%) |
৪ (০.৩৭%) |
৩১ (২.৮৭%) |
১০৭৮ (১০০%) |
তথ্য সূত্র: নির্বাচন কমিশন
- মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে ৬৯.৭৬% ব্যবসায়ী, ১২.৮০% কৃষিজীবী, ৯.৯২% চাকুরীজীবী, ৪.২৭% আইনজীবী ও ০.৩৭% গৃহিনী। সকল বিভাগেই ব্যবসায়ী প্রার্থীর আধিক্য দেখা যায়। ব্যবসায়ীদের অনেকেই এলাকায় থাকেন না। জাতীয় রাজনীতির ন্যায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোও ব্যবসায়ীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
- শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মীরা প্রার্থী হননি।
- প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাবসায়ীর সংখ্যা অধিক হওয়ায় নির্বাচনে টাকার খেলার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
মামলা সংক্রান্ত তথ্য:
বিভাগ | পৌরসভা | যে কয়টা পৌরসভার তথ্য যোগাড় করা গেছে | মোট মেয়র প্রার্থী | বর্তমান মামলা | অতীত মামলা | ৩০২ ধারায় মামলা |
রাজশাহী | ৪৯ | ৪৯ | ২৬৮ | ১১২ | ২১৬ | ২৬ |
রংপুর | ২৪ | ২৩ | ১৪৩ | ৫৮ | ১২০ | ৪ |
ঢাকা | ৬৭ | ৬৩ | ২৯২ | ১১৯ | ৩৫৭ | ২১ |
খুলনা | ৩২ | ২৫ | ১২৪ | ৫৫ | ১২৯ | ২২ |
বরিশাল | ২১ | ১৬ | ৬২ | ২৫ | ৬০ | ৫ |
চট্টগ্রাম | ৫০ | ২৩ | ১৩২ | ৪২ | ২০৬ | ৯ |
সিলেট | ১৬ | ১৩ | ৫৭ | ৩১ | ৪২ | ১ |
মোট | ২৫৯ | ২১২ | ১০৭৮ | ৪৪২ (২৬.৬৩%) |
১১৩০ (৬৮.০৭%) |
৮৮ (৫.৩০%) |
তথ্য সূত্র: নির্বাচন কমিশন
- বর্তমানে মামলায় অভিযুক্ত আছেন ২৬.৬৩% এবং ৬৮.০৭% প্রার্থীর বিরুদ্ধে অতীতে মামলা ছিল।
- ৩০২ ধারা অর্থাৎ হত্যা মামলা রয়েছে ৫.৩০% এর বিরুদ্ধে।
- অনেক বিতর্কিত ব্যক্তি প্রার্থী হয়েছেন। গ্রেসামস ল’ – ’ব্যাড মানি ড্রাইভস দি গুড মানি আউট অব সার্কুলেশন’ – এক্ষেত্রে কাজ করেছে। বিতর্কিত প্রার্থীরা ভালো প্রার্থীদেরকে নির্বাচনী ময়দান থেকে বিতাড়িত করেছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত প্রার্থীর ছড়াছড়ি।
স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য
বিভাগ | পৌরসভা | যে কয়টা পৌর সভার তথ্য যোগাড় করা গেছে |
৫ লক্ষের নীচে | ৫ লক্ষ ১ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা |
১৫ লক্ষ ১ টাকা থেকে ২৫ লক্ষ টাকা |
২৫ লক্ষ ১ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা |
৫০ লক্ষ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা |
১ কোটি টাকা থেকে ১০ কোটি টাকা |
১০ কোটি টাকার উপরে |
উল্লেখ নাই |
রাজশাহী | ৪৯ | ৪৯ | ১৮৪ | ৪২ | ২১ | ৭ | ৮ | ৪ | – | ২ |
রংপুর | ২৪ | ২৩ | ৮৫ | ৩১ | ৯ | ৯ | ৪ | ২ | – | ৩ |
ঢাকা | ৬৭ | ৬৩ | ১৮৮ | ৫৩ | ১৭ | ১৮ | ১২ | ৪ | – | – |
খুলনা | ৩২ | ২৫ | ৭৮ | ২৩ | ৭ | ১০ | ৫ | ২ | – | – |
বরিশাল | ২১ | ১৬ | ৩৬ | ১২ | – | ৭ | ৩ | ৪ | – | – |
চট্টগ্রাম | ৫০ | ২৩ | ৮০ | ১৯ | ৭ | ৮ | ৫ | ১১ | – | ২ |
সিলেট | ১৬ | ১৩ | ৩৬ | ১১ | ৩ | – | ২ | ৫ | – | – |
মোট | ২৫৯ | ২১২ | ৬৮৬ (৬৩.৬৪%) |
১৯১ (১৭.৭২%) |
৬৪ (৫.৯৪%) |
৫৯ (৫.৪৭%) |
৩৯ (৩.৬২%) |
৩২ (২.৯৭%) |
– |
৭ (০.৬৪%) |
তথ্য সূত্র: নির্বাচন কমিশন
- হলফনামায় প্রদত্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিবরণী বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মেয়র প্রার্থী এবং তাদের ওপর নির্ভরশীলদের মধ্যে ২.৬০% কোটিপতি রয়েছেন। অধিকাংশ অর্থাৎ ৬৩.৬৪% প্রার্থীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৫ লক্ষ টাকার নীচে। তবে অনেক প্রার্থীই স্থাবর সম্পত্তির মূল্য উল্লেখ করেননি।
ঋণ সংক্রান্ত তথ্য
বিভাগ | পৌরসভা | যে কয়টা পৌরসভার তথ্য যোগাড় করা গেছে | ৫ লক্ষের নীচে | ৫ লক্ষ ১ টাকা থেকে ১৫ লক্ষ টাকা | ১৫ লক্ষ ১ টাকা থেকে ২৫ লক্ষ টাকা | ২৫ লক্ষ ১ টাকা থেকে ৫০ লক্ষ টাকা | ৫০ লক্ষ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা | ১ কোটি টাকা থেকে ১০ কোটি টাকা | ১০ কোটি টাকার উপরে |
রাজশাহী | ৪৯ | ৪৯ | ৩৭ | ১৭ | ৮ | ৪ | ২ | ৬ | ১ |
রংপুর | ২৪ | ২৩ | ১৯ | ২০ | ৭ | ৬ | ৫ | ২ | – |
ঢাকা | ৬৭ | ৬৩ | ৩৪ | ২৪ | ১৩ | ৩ | ৪ | ৭ | ১ |
খুলনা | ৩২ | ২৫ | ১৭ | ১৫ | ৪ | ৬ | ১ | ২ | ১ |
বরিশাল | ২১ | ১৬ | ১৩ | ৩ | – | ২ | ১ | ৩ | – |
চট্টগ্রাম | ৫০ | ২৩ | ১৫ | ৫ | ১ | ৩ | ১ | ২ | – |
সিলেট | ১৬ | ১৩ | ৫ | ৬ | ৪ | ২ | ২ | ৩ | – |
মোট | ২৫৯ | ২১২ | ১৪০ (১২.৯৯%) |
৯০ (৮.৩৫%) |
৩৭ (৩.৪৩%) |
২৬ (২.৪১%) |
১৭ (১.৫৮%) |
২৫ (২.৩২%) |
৩ (০.২৯%) |
তথ্য সূত্র: নির্বাচন কমিশন
- মাত্র ৩১ শতাংশ প্রার্থীর এবং প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের ঋণ রয়েছে।
কর সংক্রান্ত তথ্য
- ২১২টি পৌরসভার ১০৭৮ জন প্রাথীর মধ্যে ২০০ জন কর দিয়েছেন। নিম্নে বিভাগ অনুযায়ী তা উল্লেখ করা হলো
বিভাগ | প্রার্থীর সংখ্যা | কর প্রদাণকারীর সংখ্যা |
রাজশাহী | ২৬৮ | ২১ (৭.৮৪%) |
রংপুর | ১৪৩ | ২১ (১৪.৬৯%) |
ঢাকা | ২৯২ | ৭৮ (২৬.৭১%) |
খুলনা | ১২৪ | ২৩ (১৮.৫৫%) |
বরিশাল | ৬২ | ১৮ (২৯.০৩%) |
চট্টগ্রাম | ১৩২ | ২৭ (২০.৪৫%) |
সিলেট | ৫৭ | ১২ (২১.০৫%) |
১০৭৮ | ২০০ (১৮.৫৫%) |
তথ্য সূত্র: নির্বাচন কমিশন
- মেয়র পদপ্রার্থীদের প্রায় ১৯ শতাংশ কর প্রদান করে থাকেন।
তিন লক্ষ টাকা কিংবা তার উপর আয় উপার্জনকারী ব্যবসায়ী এবং চাকুরীজীবীদের কর প্রদানের তথ্য
বিভাগ | পৌর সভা |
যে কয়টা পৌরসভার তথ্য যোগাড় করা গেছে | বাৎসরিক ৩ লক্ষ টাকার অধিক আয় (ব্যবসায়ী ) | কর প্রদান করেছেন | বাৎসরিক ৩ লক্ষ টাকার অধিক আয় (চাকুরীজীবী) |
কর প্রদান করেছেন | বাৎসরিক ৩ লক্ষ টাকার উপর আয় (অন্যান্য) | কর প্রদান করেছেন | বাৎসরিক ৩ লক্ষ টাকার উপর আয় এমন মোট সংখ্যা | মোট কর প্রদান করেছেন |
রাজশাহী | ৪৯ | ৪৯ | ১৭ | ১০ | ২ | ১ | – | – | ১৯ | ১১ (৫৭.৯০%) |
রংপুর | ২৪ | ২৩ | ৯ | ৪ | – | – | – | – | ৯ | ৪ (৪৪.৪৪%) |
ঢাকা | ৬৭ | ৬৩ | ৩১ | ২৭ | ২ | ২ | – | – | ৩৩ | ২৯ (৮৭.৮৮%) |
খুলনা | ৩২ | ২৫ | ১৪ | ১১ | – | – | – | – | ১৪ | ১১ (৭৮.৫৭%) |
বরিশাল | ২১ | ১৬ | ১২ | ১০ | – | – | – | – | ১২ | ১০ (৮৩.৩৩%) |
চট্টগ্রাম | ৫০ | ২৩ | ২৭ | ১৭ | ৩ | ২ | – | – | ৩০ | ১৯ (৬৩.৩৩%) |
সিলেট | ১৬ | ১৩ | ৮ | ৬ | ২ | ১ | – | – | ১০ | ৭ (৭০.০০%) |
২৫৯ | ২১২ | ১১৮ | ৮৫ | ৯ | ৬ | – | – | ১২৭ | ৯১ (৭১.৬৫%) |
তথ্য সূত্র: নির্বাচন কমিশন
- তিন লক্ষ টাকা কিংবা তার উপর আয় এমন প্রার্থীর সংখ্যা ১২৭ জন। এদের মধ্যে ৯১ জন (৭১.৬৫%) কর প্রদান করেন।
- ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৭২.০৩% এবং চাকুরীজীবীদের মধ্যে ৬৬.৬৭% কর প্রদান করেছেন।
- করযোগ্য আয় থাকা সত্ত্বেও সম্ভবত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রার্থী কর প্রদান করেননি।
উপসংহার:
উপরিউক্ত বিশ্লেষণ থেকে আমরা দলভিত্তিক পৌরসভা নির্বাচনের যৌক্তিকতা খুঁজে পাই না। অনেক পৌরসভাতেই মেয়র পদপ্রার্থীর সংখ্যা দুই/তিন জনের মধ্যে সীমিত। আমাদের আশংকা যে, পৌরসভা প্রতি গড় মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় কমে গিয়েছে। ফলে ভোটারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিধি সীমিত হয়ে গিয়েছে এবং তারা যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনের সর্বোচ্চ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। একই সাথে বিদ্রোহী প্রার্থীর ছড়াছড়ির কারণে রাজনৈতিক দলগুলোও একক প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যেখানে জোর করে একক প্রার্থী দেওয়া হয়েছে, সেখানে দলীয় কোন্দল প্রকট হয়েছে। তাই দলীয়ভিত্তিক স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্তটি বুদ্ধিভিত্তিক হয়নি বলেই আমাদের ধারণা।
আমরা মনে করি যে, হলফনামায় প্রার্থীদের সঠিক তথ্য প্রদান করার সংস্কৃতি গড়ে তোলা গেলে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য সৎ-যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীদের আগ্রহ বাড়বে। অবাঞ্চিত প্রার্থীরা নির্বাচনী ময়দান থেকে দূরে থাকবে। একইসাথে ভোটাররাও প্রার্থীদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তারা সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। এজন্য অবশ্য প্রয়োজন হবে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রার্থীদের প্রদত্ত তথ্য পরিপূর্ণভাবে যাচাই-বাছাই করা।
আমার ভোট আমি দেব
জেনে-শুনে-বুঝে দেব
সৎ-যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত ব্যক্তিকে দেব।