সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক গোলটেবিল বৈঠক “একতরফা বিতর্কিত নির্বাচন থেকে বিলম্বিত সুষ্ঠু ও অর্থবহ নির্বাচনই শ্রেয়”

“একতরফা বিতর্কিত নির্বাচন থেকে বিলম্বিত সুষ্ঠু ও অর্থবহ নির্বাচনই শ্রেয়”

roundtable-13গত ১৩ ডিসেম্বর, ২০০৬ সকাল ৯.৩০টায় ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর উদ্যোগে সিরডাপ মিলনায়তনে “চলমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণের উপায়: কার কী করণীয়” শীর্ষক একটি গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সুজনের সভাপতি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মোজাফ্‌ফর আহমদ-এর সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুজন-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
গোলটেবিল বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন – সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জনাব রেহমান সোবহান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা জনাব মোঃ হাফিজ উদ্দিন খান ও জনাব এ এসএম শাহজাহান, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সাবেক মন্ত্রী জনাব আবদুল মতিন খসরু ও শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাংসদ জনাব জিএম কাদের, সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মুসলেহউদ্দিন আহমদ, সাংবাদিক ও কলামিস্ট এ বি এম মূসা ও সৈয়দ আবুল মকসূদ, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব খোন্দকার ইব্রাহীম খালিদ, নিজেরা করি’র নির্বাহী প্রধান খুশী কবির, সাবেক সচিব শাহ আব্দুল হান্নান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব জনাব বদরে আলম খান, ব্যবসায়ী মঈনউদ্দিন মোমেন, নাগরিক উদ্যোগের জাকির হোসেন প্রমুখ।
অধ্যাপক মোজাফ্‌ফর আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও অর্থবহ হতে হবে। বর্তমান সংকটাপন্ন পরিস্থিতি জাতি হিসেবে আমাদেরকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকেই যেন ঠেলে দিচ্ছে। বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের বিপরীতে যেন ক্রমশই সংকট ঘনিভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, সংকটাপূর্ণ বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন, আর এক্ষেত্রে সচেতন নাগরিকের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্- তাৎপর্যপূর্ণ।
roundtable-13-dec
নাগরিকদের মাঝে থেকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের যে সাংবিধানিক ধারা রয়েছে তা অনুসরণ না করে রাষ্ট্রপতি নিজেই প্রধান উপদেষ্টার পদটি গ্রহণ করে সংবিধান অমান্য করেছেন বলে সাবেক বিচারপতি জনাব কাজী এবাদুল হক দাবি করেন। ’৯১ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে জনাব রেহমান সোবহান বলেন, তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকা ছিল নির্দলীয়। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন কি তা আছে? জনাব এ এসএম শাহজাহান তার বক্তব্যে বলেন, সার্বিক সংস্কারের আগে প্রয়োজন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংস্কার, বিশেষ করে রাজনীতিবিদদের গণতন্ত্র চর্চা এবং যথাযথভাবে অঙ্গীকার বাস্-বায়ন করা অত্যন্- গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন। জনাব মোঃ হাফিজ উদ্দিন খান গণঅভ্যুত্থানের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, কানসাট, ফুলবাড়ি, শানির আখড়া’র মত গণজাগরণ প্রয়োজন সারা দেশেই। তিনি আরো বলেন, চলমান সংকট নিরসনে কোন শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সেনাবাহিনীকে স্বাগত জানাবে – এটা আমি মনে করি না।
মূল প্রবন্ধে ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয়, আর সুষ্ঠু ও অর্থবহ নির্বাচনের জন্য দরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সুস্পষ্ট অঙ্গীকার। একইসাথে প্রয়োজন প্রতি কেন্দ্রে নাগরিকের ভিজিলেন্স টীম, যাতে প্রকৃত জনমত ছিনতাই হয়ে না যায়। তিনি বলেন, আজ আমাদের সামনে জরুরি হলো যথাসময়ে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হলেই হবে না, এটি অর্থবহও হতে হবে। অর্থাৎ নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গুণগত মানে পরিবর্তন আসতে হবে। আর এ পরিবর্তন আসলেই সন্ত্রাস, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়ন, দারিদ্র্য, বৈষম্য, জঙ্গিবাদ, ইত্যাদির মতো দুরূহ সমস্যা সমাধানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেবে।
এছাড়া গোলটেবিলে উত্থাপিত সুজনের প্রস্তাবসমূহের প্রতি উপস্থিত সকলেই ঐকমত্য পোষণ করেন।

Related Post

গণতন্ত্র আজ প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের কাছে জিম্মি – গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারাগণতন্ত্র আজ প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের কাছে জিম্মি – গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

গত ২৮ মার্চ ২০১২, সকাল ১০ টায়, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে, সুজনের উদ্যোগে, আমাদের গণতন্ত্র কোন পথে’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অধ্যাপক মোজাফ্‌ফর আহমদের সভাপতিত্বে বৈঠকে সঞ্চালক

সুজনের আয়োজনে ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করণীয়’ শীর্ষক অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকসুজনের আয়োজনে ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করণীয়’ শীর্ষক অনলাইন গোলটেবিল বৈঠক

গত ১৫ অক্টোবর ২০২০, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১টায় নাগরিক সংগঠন সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক-এর পক্ষ থেকে শীর্ষক ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করণীয়’ একটি অনলাইন গোলটেবিল বৈঠক এর আয়োজন করা হয়। এই

“সংসদের কার্যকারিতা ও সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি” শীর্ষক সুজনে’র গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত“সংসদের কার্যকারিতা ও সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি” শীর্ষক সুজনে’র গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠিত

সংসদ সদস্যদেরকে সংসদীয় কাজে নিবিষ্ট করা এবং তাঁদেরকে স্থানীয় উন্নয়ন কাজ থেকে দূরে রাখা; সংসদীয় কার্যক্রমে সর্বোচ্চ অবদান রাখার লক্ষ্যে তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করা এবং সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয়