সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক মূল প্রবন্ধ (Keynote papers),সংবাদপত্রে সুজন সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনে কারা জিতলেন

সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনে কারা জিতলেন


ড. বদিউল আলম মজুমদার
(পূর্ব প্রকাশের পর)
একথা সত্য যে, সাম্প্রতিক নির্বাচনে পুরানো ধারার রাজনীতির এবং পেট্রোন-ক্লায়েন্ট সম্পর্কেরই বিজয় হয়েছে। ভোটারদের কাছে প্রার্থীদের সততা-যোগ্যতা তেমন গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়নি। বরং প্রার্থীর দলীয় আনুগত্য এবং তাদের পেট্রোন হিসেবে বিশ্বাসযোগ্যতাই – যে বিশ্বাসযোগ্যতা সাধারণ ভোটারদের সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা প্রদানে সক্ষমতার নিদর্শন – অধিকাংশ ভোটারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই বলে আশাবাদী হবার কি কিছুই নেই? সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সিটি ও পৌর নির্বাচনে অনেকগুলো তাৎপর্য্যপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে, যা আশার আলো বহন করে বলে আমাদের বিশ্বাস। যেমন, এ নির্বাচনে প্রথমবারের মত প্রার্থীদেরকে তাদের নিজেদের অপরাধী কর্মকাণ্ডের ইতিহাস এবং নিজেদের ও পারিবারিক আয়-সম্পদ এবং দায়-দেনার তথ্য হলফনামার মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারের কাছে প্রদানের আইনগত বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে – অতীতে আদালতের নির্দেশে শুধুমাত্র জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য তা বাধ্যতামূলক ছিল। এ বাধ্যবাধকতা অসৎ ব্যক্তিদেরকে নির্বাচনী অঙ্গন থেকে দূরে রাখার ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে। সুজন আয়োজিত মুখোমুখি অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত মেয়র পদপ্রার্থীগণ একটি লিখিত অঙ্গিকারনামায় স্বাক্ষর করেন। নির্বাচিত মেয়রদের মধ্যে জেলে থাকা তিনজন ব্যতীত সকলেই তা করেন। স্বাক্ষরিত অঙ্গিকারনামায় নিম্নের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল: আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করব। নির্বাচনী আচরণবিধিসহ সকল প্রকার বিধি-বিধান মেনে চলব; অর্থ বা অন্য কিছুর বিনিময়ে ভোট কিনব না; ভোটারদের ভয়ভীতি প্রাদর্শন করে ভোট আদায়ের চেষ্টা করব না; নিজে সন্ত্রাস করব না বা সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেবো না; নির্বাচিত না হলে জয়ী প্রার্থীকে সানন্দে গ্রহণ করব; নির্বাচিত না হলেও পৌর এলাকার উন্নয়নে কাজ করব এবং নির্বাচিত পরিষদকে সহায়তা করব; নির্বাচিত হলে সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করব এবং জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করব; নির্বাচিত হলে পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত করব, পৌর এলাকাকে মাদকমুক্ত করব; ট্যাক্স আদায়সহ স্থানীয় সম্পদ সংগ্রহে উদ্যোগী হব এবং এলাকার উন্নয়নে স্থানীয় সম্পদ কাজে লাগাব; নির্বাচিত হলে উন্মুক্ত বাজেট অধিবেশন করব; নির্বাচিত হলে আমি নারী, মুক্তিযোদ্ধা, পঙ্গু ও অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এবং প্রতিবন্ধীসহ সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করব এবং তাদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখব; নির্বাচিত হলে আজকের অঙ্গিকারের ভিত্তিতে জনগণের মুখোমুখি হব এবং অঙ্গিকারসমূহ কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে বা হচ্ছে তার জবাবদিহি করব; নির্বাচিত হলে আমি প্রতিবছর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পদ, আয়-ব্যয় ও দায়-দেনার হিসাব প্রকাশ করব।
শুধু লিখিতই নয়, প্রার্থীগণ পরস্পরের হাত ধরে এ অঙ্গিকারগুলো মৌখিকভাবেও ব্যক্ত করেন, যার ভিডিও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। আনন্দের কথা যে, নির্বাচনের পরও নির্বাচিত মেয়রগণ বিভিন্ন ফোরামে এ সকল অঙ্গিকারের প্রতি পুনরায় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তাই তাদের পক্ষে অতীতের ধারার দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতিতে ফিরে যাওয়া অত্যন্ত দুরূহ হবে, যদিও তা বহুলাংশে নির্ভর করবে সচেতন নাগরিক সমাজের সক্রিয় ভূমিকার ওপর।
সদ্য অনুষ্ঠিত চারটি সিটি কর্পোরেশন ও নয়টি পৌরসভা সম্পর্কে সার্বজনিন আকাঙক্ষা ছিল যে, এগুলো সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হবে। পর্যবেক্ষকদের মতে, তাই হয়েছে বলা চলে। তাই নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও ফলাফলকে প্রভাবিত করার কোন দৃশ্যমান আলামত পাওয়া যায়নি, যদিও বরিশালের ভোট গণনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা আশা করি যে, নির্বাচন কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট থেকে বরিশালের বিষয়টি সম্পর্কে সকল সন্দেহ দূরীভূত হবে।
তবে অর্থবহতার – নির্বাচিত প্রতিনিধিদের গুণগত মানোন্নয়নের – বিবেচনায় নির্বাচনী ফলাফলগুলো অনেককে হতাশ করেছে। ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত অনেক প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন এবং অনেকে জয়ীও হয়েছেন। যে চারজন প্রার্থী জেলে থাকাকালীন কিংবা জেল থেকে মুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের সকলেই জয়ী হয়েছেন। অন্য নয় জন বিজয়ী মেয়রদের মধ্যে ২৮ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। নির্বাচিতদের মধ্যে একজন ইতোমধ্যে ফৌজদারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায় যে, অধিকাংশ নির্বাচিত মেয়রের পেশা ব্যবসা। নির্বাচিত সিটি মেয়রদের তিনজনের পেশাই ব্যবসা এবং চতুর্থজন পেশার জায়গায় ‘বর্তমানে কোন ব্যবসা নাই’ বলে উল্লেখ করেছেন। পৌর মেয়রদেরও অধিকাংশই ব্যবসায়ী। সিটি কর্পোরেশনের ও পৌরসভার সাধারণ আসন থেকে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের বেলায়ও তা সত্য। অর্থাৎ শুধু আমাদের জাতীয় সংসদই নয়, স্থানীয় পর্যায়েও রাজনীতি এবং নির্বাচিত পদগুলো ক্রমাগতভাবে ব্যবসায়িদের করায়ত্ত হয়ে গিয়েছে।
চারটি সিটি কর্পোরেশনের ৪৬ জন মেয়র পদপ্রার্থীদের অধিকাংশই ১৬ জন আয়কর রিটার্ন জমা দেননি। যারা জমা দিয়েছেন তাদের অনেকেও আয়কর যোগ্য আয় নেই বলে আয়কর প্রদান করেননি। নির্বাচিত সিটি মেয়রদের মধ্যে দুই জনের অবস্থাই এমন। যারা আয়কর দিয়েছেন, তাদের মধ্যে দুইজন ব্যতীত অন্য সবারই কর প্রদানের পরিমাণ নগণ্য। যারা আয়কর দেননি কিংবা সামান্য পরিমাণের আয়কর পরিশোধ করেছেন, তাদের অনেকেরই নিজের এবং নির্ভরশীলদের বড় অঙ্কের সম্পদ রয়েছে। এছাড়াও প্রার্থীদের জীবনযাত্রা প্রণালীর – মাসিক পারিবারিক খরচ, বিদ্যুৎ বিল, টেলিফোন বিল ইত্যাদি – যে তথ্য তাদের আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করা হয়েছে, তা অনেক ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য। অর্থাৎ অনেকক্ষেত্রেই প্রার্থীরা অসত্য তথ্য দিয়েছেন কিংবা তথ্য গোপন করেছেন। দুর্ভাগ্যবশত নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আগে এ সকল তথ্য খতিয়ে দেখেনি এবং তথ্যের অসঙ্গতির জন্য কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, যদিও গণমাধ্যমের রিপোর্ট কমিশন এখন তদন্ত করছে এবং অনেকের হলফনামায় ও আয়কর রিটার্নে অসঙ্গতি পেয়েছে। তদন্তের ক্ষেত্রে তারা এনবিআর ও পুলিশের সহযোগিতা নিচ্ছে। সবচেয়ে ভালো হতো, নির্বাচনের আগে তথ্য গোপনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, কারণ নির্বাচন পরবর্তীকালে জয়ীদের নির্বাচন বাতিল করা সহজ হবে না।
নির্বাচন কমিশনের বড় ব্যর্থতা ছিল তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে । প্রথমত, কমিশন প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পূর্বে হলফনামার কপি প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে। কমিশনের মতে, যারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন, তাদের তথ্য প্রকাশ ‘অনৈতিক’ এবং তাদের হলফনামার কপি প্রকাশ করা হয়নি। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক এবং জনস্বার্থ পরিপন্থি। এছাড়াও কমিশন প্রার্থীদের আয়কর রিটার্নের কপি প্রকাশ করা শুরু করে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার প্রায় তিন সপ্তাহ পরে, তাও সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের প্রতিবাদের পর। আরো দুঃখজনক যে, বরিশাল থেকে আমরা আয়কর রিটার্নের কপি পেয়েছি নির্বাচনের আগের দিন – এগুলোও আবার অসম্পূর্ণ। নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ছিল, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের ব্যাপারে অনাকাঙিক্ষত শিথিলতা এবং তথ্যের অসঙ্গতির জন্য প্রার্থীতা বাতিলের ব্যাপারে উদ্যোগহীনতা, যদিও সুজনের পক্ষ থেকে এবং গণমাধ্যমের রিপোর্টে তথ্য গোপন ও অসত্য তথ্য প্রদানের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়।
নির্বাচনকালে সৎ, যোগ্য ও জনকল্যাণে নিবেদিত প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে নাগরিক সংলাপ ও প্রার্থী-ভোটার মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনেক প্রচার প্রচারণাও চালানো হয়। তবুও অনেক বিতর্কিত প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। এর অন্যতম কারণ হলো, আমাদের বিরাজমান সামন্তবাদী পেট্রোন-ক্লায়েন্ট বা প্রভূ-করুণার পাত্রের সম্পর্ক। এ সম্পর্কের ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের প্রভূদেরকেই, যারা তাদেরকে নানা সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা প্রদান করতে সক্ষম, ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এছাড়াও আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোও বিতর্কিত প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন বা সমর্থন প্রদান করতে দ্বিধা করেনি। সচেতন নাগরিক সমাজও অন্যায়ের বিপক্ষে এবং সৎ, যোগ্য প্রার্থীর পক্ষে তেমন সোস্তার হননি। সরকারও যাদের বিরুদ্ধে দুর্বৃত্তায়নের অভিযোগ উত্থাপন করেছে কিংবা যাদেরকে অন্তরীণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো নিষপত্তি করতে পারেনি। প্রার্থীদের প্রদত্ত তথ্য প্রকাশ এবং যাচাই-বাছাই করে তথ্য গোপনকারীর কিংবা অসত্য তথ্য প্রদানকারীর বিরুদ্ধে কমিশনের ঢিলেমিও অযোগ্য প্রার্থীর নির্বাচনে সহায়তা করেছে।
সৎ, যোগ্য প্রার্থীর পৰে আওয়াজ ওঠা সত্ত্বেও, অধিক সংখ্যক বিতর্কিত ব্যক্তিদের নির্বাচিত হয়ে আসার ব্যাপারে হতাশ হওয়ার কোন অবকাশ নেই বলে আমরা মনে করি। এবারকার নির্বাচনে প্রথমবারের মত প্রার্থীদের পক্ষ থেকে হলফনামা আকারে তথ্য প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সুজন ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রার্থী ভোটার মুখোমুখি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গণমাধ্যমও এ ব্যাপারে অধিকহারে আগ্রহ প্রদর্শন করছে। প্রার্থীরাও নির্বাচনের আগে বিরাজমান দুনীতি-দুবৃর্ত্তায়নের পন্থা পরিহারের মৌখিক ও লিখিত অঙ্গিকার করেছে এবং নির্বাচন পরবর্তীকালে বিজয়ীরা এ সকল অঙ্গিকার বাস্তবায়িত করার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেছে। এ সকল ইতিবাচক বিষয় আমাদেরকে দীর্ঘমেয়াদিভাবে আশান্বিত না করে পারে না। (সমাপ্ত)
[লেখক : সম্পাদক, সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক]
তথ্য সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ২৬ আগস্ট ২০০৮

Related Post

সংসদীয় বিশেষ অধিকার, ক্ষমতা ও দায়মুক্তি : আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসংসদীয় বিশেষ অধিকার, ক্ষমতা ও দায়মুক্তি : আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা

ড. বদিউল আলম মজুমদার: সংসদ সদস্যদের দায়মুক্তির বিধানগুলো পৃথিবীর সব দেশেই সচরাচর বিদ্যমান। কিন্তু বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন করার কারণে শাস্তি প্রদানের, বিশেষত বহিষ্কারের নজির অনেকটা সীমিত। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে

আসন্ন নির্বাচন ও নাগরিক প্রত্যাশাআসন্ন নির্বাচন ও নাগরিক প্রত্যাশা

ড. বদিউল আলম মজুমদার (পূর্ব প্রকাশের পর) আমরা আশা করি যে, উপজেলা নির্বাচন হবে। কিন্তু নতুন উপজেলা অধ্যাদেশ নিয়েও আমাদের গুরুতর আপত্তি রয়েছে। গত ৩০ জুন জারি করা অধ্যাদেশ অনুযায়ী

উন্মোচিত হলো বিরাট সম্ভাবনার দ্বারউন্মোচিত হলো বিরাট সম্ভাবনার দ্বার

মন্তব্য প্রতিবেদন ড. বদিউল আলম মজুমদার ১৯৮৫ ও ১৯৯০ সালের পর তৃতীয়বারের মতো আজ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার ব্যাপারে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কারণ